শীত মৌসুমে ডিসেম্বরের শেষ সময়ে ৯ ডিগ্রিতে নামল পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলায় ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ। বর্তমানে এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর তথ্য মতে, গত বছর ১২ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ এর নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। এ বছর বুধবার ৯ ডিগ্রিতে নেমেছে তাপমাত্রা। গত বছর এ সময়ে ৮ এর ঘরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল।
তাপমাত্রা কমার কারণে তীব্র শীত অনুভব হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার পর থেকেই বইতে থাকে উত্তরের হিমেল হাওয়া। হাওয়ায় নেমে আসে শীত। মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলা জুড়ে কুয়াশা আর শিশির ঝরতে দেখা যায়। গ্রামে শহরের হাটবাজারগুলোতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে।
কনকনে শীতের কারণে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষ। কনকনে শীতের কারণে কাজে যেতে কষ্ট হচ্ছে অনেকের। তবে পেটের তাগিদে কাউকে নদীতে পাথর তুলতে, কাউকে চা-বাগানে আবার কাউকে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে।
চা-শ্রমিক আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান ও জাহেরুল ইসলাম বলেন, সকালে প্রচণ্ড শীত অনুভূত হচ্ছে। কনকনে শীতের কারছে চা বাগানে কাজ করতে গেলে চা পাতা বরফের মতো লাগে। বাগানের পাতা তুলতে গিয়ে হাত-পাতা অবশ হয়ে আসে। তারপরও কাজ করতে হচ্ছে।
নারী পাথর শমিক কদবানু, জমিলাসহ কয়েকজন বলেন, আমরা ফজরের আজানের পর পরই ঘুম থেকে উঠি। কদিন ধরে খুব ঠান্ডা। ভোরে উঠে ঘরের মেঝে, আসবাবপত্র সব বরফের মতো লাগে। তারপরও কাজ শেষ করে পেটের দায়ে পাথরের কাজে যেতে হচ্ছে।
অটোরিকশা চালক আব্দুল করিম বলেন, একদিকে তীব্র শীত, আরেক দিকে ঘন কুয়াশা। গাড়ি চালানো কষ্টকর হয়ে উঠেছে। যাত্রীও মিলছে না। আয় রোজগার কমে গেছে।
এদিকে দিন-রাতে তাপমাত্রা দুই রকম থাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।