আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন করেছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্রীড়াক্ষেত্রের সম্প্রসারণ ও খেলাধুলার মানকে আরও উন্নত করার জন্য অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও ক্রীড়াক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২২’-এ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অন্যন্য গৌরব অর্জন করেছে মেয়েরা।
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক চতুর্থবারের মতো ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালক (অনূর্ধ্ব-১৭)-২০২২’ এবং তৃতীয়বারের মতো ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালিকা (অনূর্ধ্ব-১৭)-২০২২’ সফলভাবে আয়োজন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সব খেলোয়াড়কে জানাচ্ছি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ কৃতি খেলোয়াড়। তিনি ফুটবল খেলতে বেশি ভালোবাসতেন এবং স্কুল ফুটবল টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন। মহান স্বাধীনতার পর জাতির জনক দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রের উন্নয়ন ও আধুনিক কাঠামোতে রূপান্তরিত করতে সময়োপযোগী বহুমাত্রিক পদক্ষেপ ও কর্মসূচি নিয়েছিলেন। ক্রীড়ার সার্বিক উন্নয়নে জাতির জনক ১৯৭২ সালে ‘ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা’ প্রতিষ্ঠা করেন যা আজকের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। বর্তমানে দেশের ৫৩টি ক্রীড়া ফেডারেশন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
তৃণমূল পর্যায়ে খেলাধুলার আধুনিক সুবিধা ও মানোন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা প্রথম পর্যায়ে দেশের ১২৫টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১৮৬টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে দেশের অবশিষ্ট ১৭৩টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়নের কাজ চলমান রয়েছে। কোভিড-১৯ এর ভয়াবহ দুঃসময়ে আমরা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের অনুদান ও সহায়তা দিয়েছি। আমরা ক্রীড়াক্ষেত্রে উদীয়মান খেলোয়াড়দের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য বৃত্তি প্রদান, আর্থিক অনুদানসহ প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করেছি। তৃণমূল পর্যায় থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সারাবছর বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হচ্ছে। ক্রিকেটকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছি। ক্রিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ বহিঃবিশ্বে গৌরব ও সুনাম অর্জন করেছে, বিশেষ করে আমাদের তরুণ খেলোয়াড়রা যেভাবে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে তা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের ও গৌরবের।
তিনি বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত বিভিন্ন টুর্নামেন্টগুলো থেকে খুঁজে বের করা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের আবাসিক উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে চারজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে ব্রাজিলে উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আমি আশাকরি, এ টুর্নামেন্ট ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সুপ্ত প্রতিভাবান খেলোয়াড় বের হয়ে আসবে যাদের ক্রীড়া নৈপুণ্যের মাধ্যমে বহুদূর এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলবো ইনশাল্লাহ। আমি এ টুর্নামেন্টসহ সব আয়োজনের সার্বিক সাফলতা কামনা করছি।