না ফেরার দেশে চলে গেলেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা গেছেন তিনি। খবর এপি’র।
দীর্ঘদিন কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। এবারের কাতার বিশ্বকাপে তার দেশের খেলা দেখতে চেয়েছিলেন স্টেডিয়ামে বসে। কিন্তু চিকিৎসকের অনুমতি না পাওয়ায় পূরণ হয় না কালোমানিকের সেই ইচ্ছে।
ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা, তিনবার বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার, দ্য গ্রেটেস্ট অব অল টাইম, ব্ল্যাক ডায়মন্ড অব ফুটবল- অ্যাডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো পেলে। তাকে ভালোবেসে না জানি আরও কত নামেই ডাকতো তার ভক্তরা। ফুটবলে ব্রাজিলের রাজত্বের প্রথম রাজা তিনি।
১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের মিনাস গ্যারিয়াস শহরে জন্ম পেলের। পুরো বিশ্বের কাছে তিনি পেলে নামেই বেশি পরিচিত। ব্রাজিলের হয়ে জিতেছেন তিনটি বিশ্বকাপ । ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০ সালের ফুটবল ইতিহাসটা তার একার বানানো। ক্যারিয়ারে ১ হাজার ৩৬৬ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ১ হাজার ২৮৩টি। আর ব্রাজিলের হয়ে ৯২ ম্যাচে ৭৭টি গোলের রেকর্ড তার।
ব্রাজিলের জার্সিতে পেলের অভিষেক হয় ১৯৫৭ সালের ৭ জুলাই। প্রতিপক্ষ ছিল আর্জেন্টিনা। ২-১ ব্যবধানে হারা সে ম্যাচে ১৬ বছর ৯ মাস বয়সে আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রথম গোল করে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার আসনে বসেন ব্রাজিলের এ ফরোয়ার্ড। সেই থেকে শুরু।
কথায় আছে আপনি আপনার প্রিয় খেলোয়াড়কে যে রেকর্ডই করতে দেখেন, পেলে সেই রেকর্ড সবার আগেই করে রেখেছেন।
১৯৫৮ বিশ্বকাপে পেলে মাঠে নেমেছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে গোল করতে পারেননি তিনি। তবে টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম জালের দেখা পান। ওই ম্যাচের সময় পেলের বয়স ছিল ১৭ বছর ২৩৯ দিন, বিশ্বকাপের গোলদাতাদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী ফুটবলার হিসাবে নাম লেখান।
১৯৭০ সালের বিশ্বকাপের পর নিজেকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে প্রমাণ করেন পেলে। সেই টুর্নামেন্টে এ তারকা ফরোয়ার্ড পেয়েছিলেন সেরা খেলোয়াড়ের তকমা।
তিনি বিশ্বের একমাত্র তারকা যার নামের পাশে আছে ৯২টি হ্যাটট্রিক। অবিশ্বাস্য হলেও, ফুটবল জাদুকরে জন্য এ যেনো কিছুই না।
ফুটবলের সেরাদের তালিকায় রয়েছেন জিনেদিন জিদান, জিয়ানলুইজি বুফন, লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোসহ অসংখ্য নাম। সামনে আরও আসবে। কিন্তু সর্বকালের সেরার তকমাটা যেনো পেলে আর দিয়াগো ম্যারাডোনাকে ঘিরেই আবর্তিত।