দেশ বরেণ্য স্থপতি, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের (আইএবি) সদ্য সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবাশ্বের হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আজ সোমবার এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার, নিকটাত্মীয়, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
শোকবার্তায় মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন দেশের স্থাপত্য শিল্পে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। তিনি ছিলেন জাতির গর্বিত সন্তান। তিনি তাঁর মেধা ও মনন দিয়ে স্থাপত্য শিল্প সমৃদ্ধ করেছেন। নাগরিক অধিকার আদায় আন্দোলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার আন্দোলন ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে তিনি অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন অনিয়মের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। নগরীর মাঠ, পার্ক ও খাল অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করতে তিনি সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন প্রতিভাদীপ্ত স্থপতি ও অসাধারণ দেশপ্রেমিককে হারালো, এ শূন্যস্থান কখনোই পূরণ হওয়ার নয়।’
উল্লেখ্য, রোববার রাত ১টা ৩৮ মিনিটে ঢাকার শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে মোবাশ্বের হোসেনের মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সাবেক সভাপতি ও পরিবেশকর্মী মোবাশ্বের হোসেন ছিলেন এসোকনসাল্ট লিমিটেডের প্রধান স্থপতি। কমনওয়েলথ অ্যাসোসিয়েশন অব আর্কিটেক্টস এবং আর্কিটেক্টস রিজিওনাল কাউন্সিল, এশিয়ার (আর্কেশিয়া) প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক পরিচালক মোবাশ্বের হোসেন ব্রাদার্স ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এবং সম্মিলিত ক্রীড়া পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক।
পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনে সোচ্চার এই স্থপতি ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সহ-সভাপতি ছিলেন।
মোবাশ্বের হোসেনের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা এই স্থপতি দেশের বেশ কয়েকটি আলোচিত স্থাপনার কাজ করেছেন। চট্টগ্রাম রেলস্টেশন,প্রশিকা ভবন, গ্রামীণ ব্যাংক ভবন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
সোমবার দুপুর ১২টা থেকে তার মরদেহ সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইন্সটিটিউট প্রাঙ্গণে রাখা হয়। জোহরের পর সেখানে তার জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে বাদ আছর ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবে আরেক দফা জানাজা হবে।
স্থপতি ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী, তার দেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে দান করা হবে।