চাঙ্গা হয়ে উঠছে দেশের অর্থনীতি, ডলারের বাজারে নেই অস্থিরতা

ডেস্ক রিপোর্ট

ব্যাংক-টাকা
ফাইল ছবি

প্রায় দুই মাস ধরে ডলারের বাজারে নেই আগের মতো অস্থিরতা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাচ্ছে বলে যে ‘প্রচারণা’ চলছিল, সেটাও ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। বিশেষ করে নতুন বছর শুরুর পরপরই অর্থনীতির বেশ কিছু সূচকে সুখবর পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া সরকারের রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের তথ্য বলে দিচ্ছে বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও দেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

চলতি বছরজুড়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি যে চাঙ্গা থাকবে তার ইঙ্গিত পাওয়া যায় বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের প্রতিবেদনেও। সংস্থা দুটি মনে করে, বৈশ্বিক মন্দায় ২০২৩ সাল ইউরোপের কিছু দেশের জন্য যতটা খারাপ যাবে, বাংলাদেশ সেই তুলনায় অনেক ভালো থাকবে। ঋণ দাতা সংস্থা দুটির ধারণা, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরেই থাকবে। যদিও সরকারের আশা ৭ শতাংশের বেশি।

universel cardiac hospital

চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ডিসেম্বরে

বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স প্রবাহের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স বেশ খানিকটা বেড়েছে। এই মাসে ১৭০ কোটি (১.৭০ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা; যা চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আর গত বছরের ডিসেম্বরের চেয়ে বেশি ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ।

আগের তিন মাস নভেম্বর, অক্টোবর ও সেপ্টেম্বরে এসেছিল যথাক্রমে ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ, ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ এবং ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৪৯ কোটি ৩২ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ২৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে এ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে ২৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বেশি এসেছে।

সর্বোচ্চ রপ্তানি আয় ডিসেম্বরে

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। এরমধ্যে তৈরি পোশাক পণ্যের দাম ছিল ২৩ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ রপ্তানি আয়ের নতুন রেকর্ড অর্জনে সহায়তা করেছে তৈরি পোশাক খাত। একইসঙ্গে, তা নভেম্বরে হওয়া রেকর্ডকেও ভেঙ্গেছে। ডিসেম্বর মাসে ৯ শতাংশের কিছু বেশি প্রবৃদ্ধি নিয়ে রপ্তানি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যা একক মাসের হিসাবে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।

পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চ মূল্যের পোশাক অপেক্ষাকৃত বেশি হারে রপ্তানি হওয়া, এবং চীনসহ প্রধান প্রতিযোগীদের তুলনায় বড় বাজারগুলো থেকে বেশি হারে রপ্তানি আদেশ পাওয়া ডিসেম্বরে রেকর্ড রপ্তানির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। এর বাইরে প্রচলিত বাজার তথা ইউরোপ ও আমেরিকার বাইরে– নতুন বাজারগুলো থেকে বাড়তি অর্ডার আসাও সার্বিকভাবে রপ্তানি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।

কমে এসেছে বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে প্রথমবারের মতো দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি– আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ কমে ১১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১২ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। দেশের রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি ও আমদানি কমে আসায় বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

আমদানিতেও সুখবর

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে, গত নভেম্বর মাসে পণ্য আমদানি হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ টন। এসব পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৭১০ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে ৭৬৪ কোটি ডলারের ১ কোটি ২৭ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়। অর্থাৎ পরিমাণগত দিক থেকে নভেম্বর মাসে আমদানি কমেছে ৮ শতাংশ। আর আমদানি ব্যয়ের হিসাবে কমেছে ৭ শতাংশ।

তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৫ কোটি ৬৫ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি হয় ৫ কোটি ৩১ লাখ টন। পণ্য আমদানি বেড়েছে ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। এদিকে চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে আমদানি ব্যয় দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫৪৯ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ২৯৪ কোটি ডলার। এ হিসাবে আমদানি ব্যয় এখনও প্রায় ৮ শতাংশ বেশি।

বেড়েছে বেসরকারি ঋণ

নভেম্বর শেষে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশে। আগের মাস অক্টোবর শেষে যা ছিল ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। বেসরকারি ঋণ বেড়ে যাওয়া মানে হলো বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়া।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ঋণের সুদহার ৯ শতাংশের মধ্যে। এজন্য অনেকেই নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াচ্ছেন। অনেক ব্যাংকে আবাসন, গাড়ি ও ব্যক্তিগত ঋণও বেশ বেড়েছে। এসবের প্রভাব পড়েছে ঋণ বিতরণে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ছে। বৈশ্বিক মন্দার এই কঠিন সময়ে ১৪ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল, তাতে এই ঋণ প্রবৃদ্ধিতে অবদান ছিল। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় দেশে বিনিয়োগের একটি অনুকূল পরিবেশও দেখা দেয়। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেলসহ কয়েকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে উদ্যোক্তারা নতুন পরিকল্পনা সাজিয়ে বিনিয়োগে নেমেছে। ব্যাংকগুলো তাতেও বিনিয়োগ করেছে। সব মিলিয়ে বেসরকারি খাতের ঋণের একটি গতি এসেছে।

সাধারণভাবে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে থাকে। তবে ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো তা নেমে যায় ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে। করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর ব্যাপক হারে কমে গিয়ে ২০২০ সালের মে মাসের শেষে প্রবৃদ্ধি নামে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে। তবে পরের মাস জুন থেকে তা অল্প অল্প করে বাড়তে থাকে।

মূল্যস্ফীতির হার কমেছে

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মূল্যস্ফীতিতেও বিরাজ করছে নিম্নমুখী ধারা। গত ডিসেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। নভেম্বর মাসে এ হার ছিল ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ। তবে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে এই হার ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ছাড়া গত মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ, যা নভেম্বর মাসে ছিল ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশে, যা নভেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অন্যদিকে গড় মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এক বছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ।

বিবিএস বলেছে, গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এ সময় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ, নভেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ, নভেম্বর মাসে যেটি ছিল ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ।

এদিকে ডিসেম্বর মাসে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশে, যেটি নভেম্বর মাসে ছিল ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। এ সময় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ, যেটি নভেম্বরে ছিল ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

মজুরি হার বেড়েছে

বিবিএস’র প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে মজুরি হার বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ০৩ শতাংশ, যা নভেম্বর মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে কৃষিতে বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যেটি নভেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ। এ ছাড়া শিল্পে মজুরি হার বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ১২ শতাংশ, যেটি নভেম্বর মাসে ছিল ৭ দশমিক ০৬ শতাংশ। সেবা খাতেও মজুরি হার বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ২৬ শতাংশ, যা নভেম্বর মাসে ছিল ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ।

রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ২৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত রিটার্ন দাখিল করেছেন ২৮ লাখ ৫১ হাজার করদাতা। এদের কাছ থেকে আয়কর বাবদ এসেছে ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এবার এখন পর্যন্ত রিটার্ন দাখিলে প্রবৃদ্ধির হার ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আর রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। গত বছর এই সময় পর্যন্ত রিটার্ন দাখিল করেছিলেন ২২ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৫ করদাতা। বিপরীতে আয়কর এসেছিল তিন হাজার ২৮১ কোটি টাকা।

পাঁচ মাসে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ১৩ শতাংশ

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এনবিআরের রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৬২০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১ লাখ ২ হাজার ২৬৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা। একক মাস হিসেবে নভেম্বরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৪ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল ২২ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। এ হিসাবে নভেম্বর মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ১০ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে এনবিআর। ওই সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে মোট ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সংস্থাটির।

চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে রাজস্ব এসেছে ৩৮ হাজার ৬০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৩ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে এ খাতে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) খাত থেকে পাঁচ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৪ হাজার ১৮৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় এ খাতে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ ছাড়া আয়কর ও ভ্রমণকর খাত থেকে পাঁচ মাসে রাজস্ব এসেছে ৩৩ হাজার ৩৭৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এ খাতে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

যা বলছেন অর্থনীতিবিদরা

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি চাঙা থাকবে এবং বেশ স্বস্তি বিরাজ করবে। তাদের ধারণা, ২০২৩ সালের অর্থনীতি থাকবে যথেষ্ট গতিশীল। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, বিশ্ব বাজারে পণ্যমূল্য আগামী দিনগুলোতে আরও কমবে। ফলে আমাদের অর্থনীতিতেও আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ কমে আসবে।

তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বখাদ্য সংকট যাই থাকুক না কেন আমাদের দেশে খাদ্য সংকট তীব্র হবে না। কারণ, কৃষিখাতে সরকার যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়ার ফলে এই সক্ষমতা আমাদের তৈরি হয়েছে। এছাড়া আমনের ভালো উৎপাদন হয়েছে। আশা করছি বোরো উৎপাদনও ভালো হবে।

পিআরআইবি নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুরের মতে, নতুন বছরে মূল্যস্ফীতির চাপ খানিকটা কমে আসবে। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে।

সরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, পদ্মা সেতু চালু হয়েছে, মেট্রোরেলের আংশিক চালু হয়েছে, কর্ণফুলী টানেল চালু হবে; এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির দিগন্ত বদলে যাবে। এর প্রভাব পড়বে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমছে। বেশ কিছু পণ্যের দাম কমছে। আশা করা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম আরও কমবে। এর সুফল এই নতুন বছর বাংলাদেশ পাবে।

শেয়ার করুন