বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের দীর্ঘ এ পথচলায় মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠনটি।
বিগত এক দশকে বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিটের কমিটি না করতে পারা, সম্মেলন ছাড়াই নেতৃত্ব নির্বাচন, কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিতর্কিতদের পদায়নসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন শীর্ষ নেতারা। এতে ম্লান হচ্ছে অনেক অর্জন। তবে এসব বিতর্ক থেকে বের হয়ে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠন পরিচালনা এবং স্মার্ট বাংলাদেশের সারথি হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ছাত্রলীগের নতুন নেতৃবৃন্দ।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাদ্দাম হোসেন বলেন, সময়ের প্রয়োজনে আজ থেকে ৭৫ বছর আগে বাঙালির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও মুক্তির মহান নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বর্তমানেও সেই ছাত্রলীগ সময়ের প্রতিটি প্রয়োজনে নিজের সর্বোচ্চটুকু বিলিয়ে দেওয়ার ব্রতকে ধারণ করে পথ চলছে। এ দেশের প্রতিটি প্রজন্মে, প্রতিটি তারুণ্যে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অনুভূতিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শ্রেষ্ঠতম স্থানে অবস্থান করেছে, করছে এবং আগামীতেও অবধারিতভাবে করবে। তাই ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ করে শেখ হাসিনার পরিকল্পিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এর নেতৃত্ব দেবে ছাত্রলীগ, ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে এটিই আমাদের সংকল্প।
আগামীতে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা দায়িত্বে বিকেন্দ্রীকরণে বিশ্বাস করি, আমরা টিম ওয়ার্কের ভিত্তিতে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করব। আমরা নিয়মিত নির্বাহ সভা করব, কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করব। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত জবাবদিহিতামূলক পরিবেশ আমরা তৈরি করতে চাই। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠন পরিচালনা করলে বিতর্ক তৈরি হবে না, আমরা সেটা নিশ্চিত করতে চাই।
সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অভিভাবক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অতীত সোনালী ইতিহাসে ফিরে যাবে। আমরা যতদিন দায়িত্বে আছি ততদিন প্রতি সপ্তাহে, মাসে সারা দেশে সম্মেলনের উৎসব চলবে। আমরা ছাত্রলীগকে গতিশীল করার জন্য প্রয়োজনে সমগ্র বাংলাদেশের অলি-গলি চষে বেড়াব। সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের সারথি হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
সংগঠনটির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্যভাবে পালন করতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সকল সাংগঠনিক কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮টায় ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে রাখা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন। বিকেল ৩টায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ। ৬ জানুয়ারি দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। ৫ থেকে ৮ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, স্বেচ্ছায় রক্তদান ও সংগৃহীত রক্ত বিতরণ এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হবে।
এছাড়াও সুবিধাজনক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত অনাবাদি জমিতে শাক-সবজি-ফল চাষ, মাছ ও গৃহপালিত পশুপালন, স্মার্ট বাংলাদেশের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক প্রতিযোগিতা ও জাতীয়ভাবে ‘স্মার্ট ইয়ুথ ক্যাম্প’ আয়োজন, শেখ হাসিনার উন্নয়ন অগ্রযাত্রা নিয়ে ‘শর্ট ফিল্ম প্রতিযোগিতা’ আয়োজনসহ বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে ছাত্রলীগ।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত কর্মসূচি যথাযথ মর্যাদায় পালন করতে ইউনিটের (জেলা, মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ) নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।