ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে (আইপিএস) বাংলাদেশকে পাশে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর ওয়াশিংটনের আরও চাপ প্রয়োগের অনুরোধ করেছে ঢাকা। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সিনিয়র ডিরেক্টর ফর সাউথ এশিয়া রিয়ার এডমিরাল এইলিন লুবাচারের ঢাকা সফরের সময়ে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছে উভয়পক্ষ।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন লুবাচার। এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পও সফর করেছেন তিনি। চার দিনের সফর শেষে মঙ্গলবার ঢাকা ত্যাগ করেছেন লুবাচার।
এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলকে ঘিরে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি প্রণয়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ অঞ্চলের সমমনা দেশগুলো যেন আইপিএসে যুক্ত হয় সেটির বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন লুবাচার। তিনি বলেন, লুবাচার বার্তা দিয়েছেন যে এ অঞ্চলের ছোট দেশগুলোকে অবহেলা করবে না যুক্তরাষ্ট্র।
এ বিষয়ে বাংলোদেশের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইপিএস নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে কাজ চলছে এবং এ বিষয়টি মার্কিন সিনিয়র ডিরেক্টরকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান হচ্ছে অর্থনৈতিক যেকোনও বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গা সমস্যা
২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ঢল নামার পরে এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে অনেক চেষ্টা করা হলেও মিয়ানমারের অনীহার কারণে বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা গণহত্যা হয়েছে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশ চায় এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেন আরও বেশি চাপ প্রয়োগ করে মিয়ানমারের ওপর।
রোহিঙ্গা বিষয়টি ধীরে ধীরে নিরাপত্তার প্রিজম থেকে দেখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা এই সমস্যা সমাধানের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল এবং এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রকে অনুধাবন করার জন্য অনুরোধ করেছে ঢাকা।
নিরাপত্তা সহযোগিতা
মানব পাচার, মাদক চোরাচালান, সুমদ্রে অবৈধ মাছ শিকারসহ বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে রয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়গুলো যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা বিষয়টিও আলোচনা হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে।
একটি সূত্র জানায়, রোহিঙ্গারা বিভিন্ন সময় মানবপাচারের শিকার হচ্ছে এবং সুমদ্র পথে তারা বিভিন্ন দেশের দিকে অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পাড়ি জমাচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা।
তিনি বলেন, মাদক চোরাচালান দমনে প্রশিক্ষণ বা বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। আবার সুমদ্র পথে অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোর জন্য জাহাজ দিতে পারে দেশটি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি দ্রুতগামি শার্ক স্পিডবোট দিয়েছিল বাংলাদেশকে।
দুইদেশের মধ্যে নিরাপত্তা আলোচনা হয়েছে এবং সামনের দিনগুলোতে আরও হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সামনের সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এসিস্ট্যন্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরের সময়ে এ বিষয়ে আরও কথা হবে।