পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী নেতা ইমরান খান ও তার ঘনিষ্ঠ দুই রাজনৈতিক সহযোগীর বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
ইমরান খান ব্যতীত আরও যাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা হলেন ইমরানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) জেষ্ঠ্য দুই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী ও আসাদ ওমর।
দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার বিরুদ্ধে ‘উসকানিমূলক’ ও ‘হিংসাত্মক’ বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনার নিসার দুররানির নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের বিচারিক বেঞ্চ এই পরোয়ানা ইস্যু করে।
ক্রিকেট থেকে রাজনীতিতে আসা ইমরান খান সেনাবাহিনীর আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন; কিন্তু তার পর থেকেই দেশটির ক্ষমতা কাঠামোর শীর্ষে থাকা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয় তার। সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের এই অবনতির জেরেই ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল পার্লামেন্টে এক অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান তিনি।
ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করা ইমরান ও তার দল পিটিআইয়ের জেষ্ঠ্য নেতারা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। পিটিআইয়ের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ইমরান খান প্রকাশ্যে বলেছিলেন—নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজা পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন জোট সরকারের ‘আজ্ঞাবহে’ পরিণত হয়েছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে অবিলম্বে আন্দোলন শুরু করার হুমকিও দিয়েছিলেন পিটিআই চেয়ারম্যান।
ইমরান ও তার দলের এসব অভিযোগের জবাব চেয়ে গত বছর আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে পিটিআই চেয়ারম্যান ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে ২ দফায় নোটিশ জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেই নোটিশের শুনানির জন্য বেশ কয়েকবার দিনও ধার্য করা হয়েছিল; কিন্তু ইমরান খান বা তার সহযোগীরা শুনানির জন্য নির্ধারিত দিনগুলোতে কমিশন কার্যালয়ে উপস্থিত হননি।
এই অনুপস্থিতির কারণে তাদের ওপর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে বলে গত মাসে সর্বশেষ শুনানিতে সতর্কবার্তা দিয়েছিল কমিশন। আজ মঙ্গলবারের শুনানিতেও তারা অনুপস্থিত থাকায় পরোয়ানা জারি করলেন কমিশনের বিচারিক বেঞ্চ।