বিশ্বব্যাংক একসময় তেল, কোকো ও সোনায় সমৃদ্ধ ঘানাকে আফ্রিকার উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। ২০১৯ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্বিগুণ হওয়ার পর বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি ছিল দেশটির। কিন্তু বর্তমানে পশ্চিম আফ্রিকায় অর্থনীতির দিক দিয়ে দেশটির আর কোনো পরিচয় নেই। কোকো ও সোনা রপ্তানিকারক দেশ হওয়া সত্ত্বেও গত কয়েক দশকের মধ্যে দেশটি সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছে।
ঘানায় বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতির রেকর্ড ৫০ দশমিক ৩ শতাংশ, যা গত ২১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ঘানা বর্তমানে অর্থনীতির বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। কারণ, বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে নেওয়া ঋণ এখন আর শোধ করতে পারছে না দেশটি। খবর রয়টার্স ও আল জাজিরার।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো-অ্যাডো ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ঘানার অর্থনৈতিক সাফল্য সবার চোখে পড়ে। তিনি মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এনেছিলেন। ২০১৬ সালে আগের সরকারের সময় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১৫ দশমিক ৪। ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ এই হার ৭ দশমিক ৯–এ নেমে আসে।
২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারির আগপর্যন্ত তা এক সংখ্যায় স্থির ছিল। প্রেসিডেন্ট আকুফো ক্ষমতায় আসার আগে দেশটির বাজেট ঘাটতি ছিল মোট দেশজ উৎপাদনের ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৯ সালের শেষের দিকে তা ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে।
আক্রাভিত্তিক পলিসি ইনিশিয়েটিভ ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল আনিম অমর্তেয় বলেন, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমরা যে প্রবৃদ্ধি দেখেছি, তা মূলত তেল খাত থেকে এসেছে। অর্থনীতির উন্নতি দেখে আমরা আনন্দিত ছিলাম, কিন্তু সঠিক কৌশলে এগোতে পারিনি। কারণ, অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অন্যান্য খাতকে প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ আমরা কৃষি খাতকে অবহেলা করেছি। এ খাতে আমরা তেমন কোনো বিনিয়োগ করতে পারিনি। অথচ সরকার আত্মতুষ্টিতে ছিল।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, ঘানার জিডিপির ২১ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে কৃষি খাত। যা এর রপ্তানি আয়েরও ৪০ শতাংশের বেশি। একই সময়ে এই খাত দেশের মোট চাহিদার ৯০ শতাংশের বেশি খাদ্য সরবরাহ করে।