বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের আমদানি-রপ্তানিতে বড় ধরনের ধস নেমেছে । ২০২০ সালের পর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ গতিতে রপ্তানির পরিমাণ কমেছে। এটি সংকেত দিচ্ছে, চীনের অর্থনীতি আবারও ঘুরে দাঁড়াবে— এমন যে ধারণা করা হচ্ছে, সেটি সত্য হওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়ে গেছে।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশটির রপ্তানির পরিমাণ কমেছে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। যা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। নভেম্বরে যা ছিল ৮ দশমিক ৭ শতাংশ।
অন্যদিকে ডিসেম্বরে বেইজিংয়ের আমদানির পরিমাণ কমেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। নভেম্বরে এটি ছিল ১০ দশমিক ৬ শতাংশ।
টানা তিন বছর করোনার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কারণে থমকে গিয়েছিল চীনের বেশিরভাগ অর্থনৈতিক কার্যক্রম। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার কোম্পানি। এখনো সেসব ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় আছে তারা।
এরমধ্যে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। কিন্তু এরপরই চীনে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিস্ফোরণ ঘটেছে। যা অর্থনীতিকে আবারও হুমকির মুখে ফেলেছে।
করোনা মহামারীর মধ্যেও চীনের রপ্তানিখাত সচল ছিল। কিন্তু ২০২২ সালে নাটকীয়ভাবে এটি কমেছে। মূলত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাপী ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়ানোয় বিদেশি ক্রেতারা আমদানির পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। এতে করে কমেছে চীনের রপ্তানি।
অক্সফোর্ড ইকোনোমিক্সের অর্থনীতিবিদ লয়েড চান বলেছেন, ‘ধীরগতির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কম উৎপাদনের বিষয়টি মিলিয়ে রপ্তানির অবস্থা দুর্বলই রয়ে গেছে।’
চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী চাহিদা কমে যাওয়ায় এবং মন্দার শঙ্কা থাকায় আমাদের বাণিজ্যিক স্থিতিশীলতা চাপে আছে।’
কারখানার কার্যকলাপের ওপর চালানো একটি আনুষ্ঠানিক জরিপে দেখা গেছে, চীনে পণ্য অর্ডারের উপ-সূচকটি গত ২০ মাস ধরে নিম্নমুখী রয়েছে।
তবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যেসব প্রদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় সেসব প্রদেশে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ চান জানিয়েছেন, তিনি আশা করছেন সরকারি নীতির কারণে হয়ত চীনের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়বে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে এ বছর প্রবৃদ্ধি নাও হতে পারে।
সূত্র: আল জাজিরা