ঢাকায় ভারতের রাষ্ট্রপতির হোটেলের ওপরে ড্রোনের রহস্য উদ্‌ঘাটন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ঢাকায় অবস্থানকালে তার হোটেলের ওপর যে ড্রোন পাওয়া গিয়েছিল, সেটির রহস্য বের করেছে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ড্রোনটি ছিল রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাসিন্দা এক কলেজছাত্রের। ড্রোন ওড়ানোর পেছনে তার অসৎ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব বর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় সফরে এসেছিলেন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিনি উঠেছিলেন রাজধানীর শাহবাগ–সংলগ্ন ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে। পরদিন বিকেলে ওই হোটেলের ওপর একটি ড্রোন উড়তে দেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এসএসএফের সহকারী পরিচালক (সহকারী পুলিশ সুপার) ইমরানুল ইসলাম।

universel cardiac hospital

দক্ষতার সঙ্গে ওই কাজ করার স্বীকৃতি হিসেবে এবার তাকে রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম-সেবা) দেওয়া হয়েছে। এসএসএফ হলো স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী), যারা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রঘোষিত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে।

এখনো এসএসএফে কর্মরত আছেন সহকারী পুলিশ সুপার ইমরানুল ইসলাম। পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩–এর প্রকাশনায় ইমরানুল ইসলামের ড্রোন শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয় করার ঘটনায় পিপিএম পদক পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হয়।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারতের রাষ্ট্রপতির মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তার ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে এর আগে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়নি।

পুলিশ পদক–২০২২ প্রকাশনায় বলা হয়, ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য তিনদিনের সফরে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় আসেন। ওই সফরে সহকারী পুলিশ সুপার ইমরানুল ইসলাম বাসভবন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অবস্থানকালে হোটেলের ওপর আন–আইডেন্টিফায়েড ড্রোনের উপস্থিতি শনাক্ত করেন।

পরে কর্মদক্ষতার সঙ্গে তিনি সেটি দ্রুত নিষ্ক্রিয় করতে সমর্থ হন। এটা ছিল সম্ভাব্য ড্রোন আক্রমণ। তার কর্মদক্ষতা ও প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে পিপিএম–সেবা পদকে ভূষিত করা হলো।

ড্রোন শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয় করার ঘটনায় তখন রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। ওই থানার তখনকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম এখন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার অপরাধ বিভাগের পরিদর্শক। আজ রোববার বিকেলে তিনি বলেন, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের ওপরে ড্রোন শনাক্তের ঘটনায় জাতীয় নিরাত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) এক কর্মকর্তা রমনা থানায় একটি জিডি করেছিলেন।

ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ সেগুনবাগিচার বাসিন্দা এক কলেজছাত্রকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত করে পুলিশ জানতে পারে, ড্রোনটি ওই ছাত্রের। মামার কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ড্রোনটি সেদিন সে উড়িয়েছিল। এর পেছনে কোনো নাশকতা বা অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জিডিটিও নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন