মহামারি করোনার প্রভাব কাটতে না কাটতেই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ইউরোপে চলমান এ যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই-নভেম্বরে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ৯ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা।
ডিসেম্বরেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি রাজস্ব আয়। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতি বা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আদায় হয়েছে ১৫ হাজার ১১২ কোটি টাকা। অর্থাৎ একমাসের ব্যবধানে রাজস্ব ঘাটতি বেড়েছে ৫ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৫৮ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে এক লাখ ৪২ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ১১ শতাংশ।
ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভ্যাট খাত থেকে রাজস্ব বেশি এসেছে। এ খাত থেকে লক্ষ্যমাত্রার ৯৫ দশমিক ১২ শতাংশ রাজস্ব আদায় হয়েছে। অর্থবছরের ছয় মাসে এ খাত থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৩ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৬ হাজার ১২৯ কোটি। অর্থাৎ ভ্যাটে ঘাটতি ২ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। এ হিসাবে ভ্যাট থেকে লক্ষ্যমাত্রার ৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ রাজস্ব আদায় করা যায়নি।
একই সময়ে আমদানি-রপ্তানিতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৪ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। এ খাত থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৪ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা। একইভাবে আয়কর ও ভ্রমণ কর খাতে ৪৭ হাজার ৪১২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এনবিআরের। এ খাতে ৪৪ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। অর্থাৎ আয়কর খাতে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা।
চলতি (২০২২-২০২৩) অর্থবছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া আছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম ছয় মাসে আদায় হয়েছে এক লাখ ৪২ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাকি ছয় মাসে এনবিআরকে আরও ২ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে।
রাজস্ব আদায়ের এই হার অব্যাহত থাকলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ কঠিন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।