ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে সমর্থন জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, ‘আসন্ন উপনির্বাচনে আপনারা সবাই ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে কলার ছড়া প্রতীকে ভোট দিয়ে ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবেন এবং গণতন্ত্রের বিজয় ঘোষণা করবেন। আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে সমর্থন করি। আমার আগে যাঁরা যা যা বলেছেন এবং আমার পরে প্রধান অতিথি যা বলবেন, সবগুলোর সঙ্গে আমি একমত।’
তিনি বলেন, ‘কিছু লোক আছে যাঁদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নাই, তাঁরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মেসেজ পাঠিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়। এই বিভ্রান্তি দূর করতে, একজন পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে, একজন সাহসী মানুষ হিসেবে যিনি তারেক রহমানের সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় এই পড়ন্ত বয়সেই মাথা উঁচু করে আপন অস্তিত্বের ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁকে আমি সমর্থন করি।’
আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত সরাইল উপজেলার সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার সমর্থনে আয়োজিত কর্মিসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এসব কথা বলেন।
কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন বলেন, ‘উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে আগে কেউ চিনত না। এখন সবাই চেনে। আমিও চিনতাম না। জীবনে প্রথম দেখলাম। প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে গেছি। এখন তিনি নিরপেক্ষ লোক। তিনি বিএনপিরও নন, আওয়ামী লীগের ও জাতীয় পার্টিরও নন। তাঁকে এখন আওয়ামী লীগ চায়, বিএনপি চায়, জাতীয় পার্টিও চায়।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন) বেয়াদবির প্রতিবাদে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে সমর্থন দিয়েছি।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনাদের এলাকার মুরব্বির সঙ্গে বেয়াদবি করেছে, তা কি মেনে নেওয়া যায়? বেয়াদবি মেনে নেওয়া যায় না। এ জন্যই আমরা তাঁকে সমর্থন দিয়েছি। নাম দিয়েছি “উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া সমর্থকগোষ্ঠী”।’
সভায় সব বক্তাই উকিল আবদুস সাত্তারের পক্ষে ‘কলার ছড়া’ প্রতীকে ভোট চেয়েছেন। আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া তাঁর দুই মিনিটের বক্তৃতায় সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
সভায় সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হোসেন সভাপতিত্ব এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ঠাকুর সঞ্চালনা করেন।
এতে আরও বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ও সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলি আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন, উপনির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের তিন নেতা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান আনসারী, সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান রতন, জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহনুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রোকেয়া বেগম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূইয়া বিজয়ী হয়েছিলেন। গত ১১ ডিসেম্বর আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য হয়। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া। তিনি এই আসনে পাঁচ বার এমপি ছিলেন।