হিজাব বিতর্কের জেরে ইরানে পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের জেরে এ পর্যন্ত চার জনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছে তেহরান। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
স্থানীয় সময় সোমবার ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক থেকে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
সুইডিশ ইইউ প্রেসিডেন্সি জানিয়েছে, সোমবার ইইউ মন্ত্রীরা ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার একটি নতুন প্যাকেজের ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
প্রেসিডেন্সি বিস্তারিত না জানিয়ে একটি টুইট বার্তায় বলেছে, ‘মন্ত্রীরা ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার একটি নতুন প্যাকেজ গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছেন। বিশেষ করে ইরানে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যারা দমন-পীড়ন চালাচ্ছেন তাদের লক্ষ্য করে। ইইউ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ইরানি কর্তৃপক্ষের নৃশংস ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ বল প্রয়োগের তীব্র নিন্দা জানায় বলেও উল্লেখ করা হয় এতে।
বিভিন্ন সূত্র গত সপ্তাহে রয়টার্সকে জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সোমবার তাদের বৈঠকে ইরানের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞায় ৩৭টি পৃথক ধারা যুক্ত করবেন।
এর আগে, মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও মোরালিটি পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাজ্য।
ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। এই বিধিগুলো তদারক করার জন্য রয়েছে দেশটির ‘নৈতিকতাবিষয়ক’ পুলিশ। এই পুলিশের একটি দল, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আটকের পর মাহসা আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় দেশজুড়ে। দেশটিতে এ পর্যন্ত সহিংসতায় প্রাণ গেছে কয়েকশ জনের। বিক্ষোভে অংশ নেন দেশটির তরুণ-তরুণীরা।
তবে ইরান বলছে, এই বিক্ষোভে উসকানি দেয় পশ্চিমারা।
সূত্র: রয়টার্স