কর্মসংস্থান সৃষ্টি-জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাসে আরও সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বব্যাংক
ছবিঃ সংগৃহীত

উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে ২০৩১ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হতে বাংলাদেশের পাশে থাকার বিষয়ে দৃঢ় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি উন্নত করা এবং জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাসে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে আরও সহায়তা করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির গতিপথ অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা। বাংলাদেশ রেকর্ড সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য হ্রাস করেছে। এছাড়া দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনে একটি অগ্রণী এবং উদ্ভাবনী ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্বব্যাংক গত পাঁচ দশক ধরে একটি অবিচল অংশীদার এবং বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন অর্জনে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি ভ্যান ট্রটসেনবার্গ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন ও দুর্যোগ প্রস্তুতিতে বাংলাদেশের ভূমিকা এবং ২০২০-২০২২ সালের মধ্যে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ ১৯৭১ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়জনিত মৃত্যু ১০০ গুণেরও বেশি কমিয়ে এনেছে। সাহসী ও উদ্ভাবনী পদ্ধতি গ্রহণ করে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতিতে বিশ্বব্যাপী মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৭০০ কিলোমিটারেরও বেশি উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ ও পুনর্বাসনে সহায়তা করেছে। স্থাপন করা হয়েছে এক হাজার সাইক্লোন শেল্টার, যা স্কুল হিসেবেও কাজ করে। এছাড়াও ৫৫০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে, যা আশপাশের গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অবদান রাখছে।

সম্প্রতি ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া, তিনি কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। প্রায় ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের উদারতার জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি। বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্বাগতিক সম্প্রদায়ের মৌলিক চাহিদা পূরণে বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য ৫৯০ মিলিয়ন অনুদানের অর্থায়ন করেছে।

বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বিশ্বব্যাংক মহামারির প্রভাব এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রভাবসহ বৈশ্বিক ধাক্কার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সাহায্য করছে। এছাড়া, উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে চ্যালেঞ্জগুলো দূর করতে সাহায্য করছে বিশ্বব্যাংক। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা। এজন্য বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি উন্নত করতে এবং জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাস করতে আরও সহায়তা করবো।

সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রটসেনবার্গ। এসব বৈঠকে বাংলাদেশকে আগামীতে আরও সহায়তার আশ্বাস দেন বিশ্বব্যাংক এমডি। তিনি উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করেন। তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার।

শেয়ার করুন