আজ মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন। এবার সরাসরি উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে তিনি সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। তবে গত বছরের মতো এবারও জেলা প্রশাসক সম্মেলনের মূল ভেন্যু রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর জেলা প্রশাসক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দু-বছর (২০২০ ও ২০২১) পর গত বছর ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক সম্মেলন হয়েছিল। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সম্মেলনের উদ্বোধন করেছিলেন। এবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন শেষ হবে ২৬ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার)।
‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৩’ নিয়ে গত রোববার (২২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। সেখানে তিনি জানান, জেলা প্রশাসক সম্মেলনকে সামনে রেখে এবার জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ২৪৫টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়, এবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং নির্দেশনা গ্রহণের পাশাপাশি স্পিকার ও বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জেলা প্রশাসকরা সৌজন্য সাক্ষাৎ, নির্দেশনা গ্রহণ ও মতবিনিময় করবেন। তাছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সামরিক-বেসামরিক সমন্বয় বিষয়ক অধিবেশন সংযুক্ত করা হয়েছে সম্মেলনে।
এবার সম্মেলনে মোট ২৬টি অধিবেশন হবে। এরমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য অধিবেশন ২০টি। এছাড়া একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে একটি, স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে একটি ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে হবে দুটি অধিবেশন।
সম্মেলনে মোট ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশগ্রহণ করবে। কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। কার্য অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এ বছর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব পাওয়া গেছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সংক্রান্ত। এ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রস্তাব ২৩টি। এরপর ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত ১৫টি প্রস্তাব ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত ১৩টি, সুরক্ষা সেবা বিভাগ সংক্রান্ত ১১টি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত ১০টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে।
এবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদারকরণ; ভূমি ব্যবস্থাপনা; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচি বাস্তবায়ন; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন; এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়।
সম্মেলনের প্রথম দিন উদ্বোধনের পর বেলা সোয়া ১১টায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের করবী হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনা হবে জেলা প্রশাসকদের।
এরপর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল পৌঁনে পাঁচটা পর্যন্ত ১৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ডিসিদের তিনটি কার্য-অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দিন সন্ধ্যা ৬টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নৈশভোজ করবেন জেলা প্রশাসকরা।