চলতি বছরের বিপিএলে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দলের লড়াই, লড়াইটা শীর্ষ দুই তারকা মাশরাফি বিন মর্তুজা আর সাকিব আল হাসানেরও। যেমন হওয়ার কথা ছিল, তেমনই হলো। শেষ ওভার পর্যন্ত কেউ কাউকে ছাড়লো না।
শেষ ওভারে সাকিবের ফরচুন বরিশালের দরকার ছিল ১৫ রান। দুর্দান্ত বোলিং করা রেজাউর রহমান রাজার হাতে বল তুলে দেন সিলেট স্ট্রাইকার্স অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
রাজা প্রথম ডেলিভারিটি দেন ওয়াইড। পরের বলে আউট করেন মারমুখী ইফতিখার আহমেদকে। দ্বিতীয় বলে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের দারুণ থ্রোতে রানআউট মেহেদি হাসান মিরাজ।
তৃতীয় বলে রাজা দেন এক রান। শেষ তিন বলে দরকার লাগে ১৩। চতুর্থ বলে ডট দেন রাজা। পঞ্চম বলে মোহাম্মদ ওয়াসিম ছক্কা হাঁকালে ফের টান টান উত্তেজনা। ছক্কা হলে ম্যাচ টাই। তবে রাজার শেষ ডেলিভারি পেছনের বাউন্ডারিতে চার হলেও শেষ হাসি হাসে সিলেটই।
মিরপুর শেরে বাংলায় রুদ্ধশ্বাস এই লড়াই ২ রানে জিতে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান পোক্ত করেছে মাশরাফির সিলেট। এখন তাদের পয়েন্ট ১২, দুইয়ে থাকা সাকিবের বরিশালের ১০।
ফরচুন বরিশালের জয়ের লক্ষ্য ছিল ১৭৪ রানের। সাইফ হাসান শুরুটা করেন দারুণ। ১৯ বলে ৪ ছক্কায় ৩১ রান তুলে দিয়ে যান এই ওপেনার। এনামুল বিজয় অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি, আউট হন মাত্র ৩ রানে।
তবে সাকিব আল হাসান আর ইব্রাহিম জাদরান ৩৯ বলে ৬১ রানের জুটিতে ম্যাচটা অনেকটা হাতে নিয়ে এসেছিলেন। ১৪তম ওভারে রেজাউর রহমান রাজা দারুণ এক স্পেলে পাল্টে দেন হিসাব।
৩৭ বলে ৪২ করা ইব্রাহিম জাদরান আর ১৮ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ২৯ করা সাকিব, দুই সেট ব্যাটারকেই পরিষ্কার বোল্ড আউট করেন রাজা। ওই ওভারটাই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। এরপর ইফতিখার আহমেদ ১৩ বলে ১৭ আর করিম জানাত ১২ বলে ২১ করলেও শেষ রক্ষা হয়নি বরিশালের।
রাজা ৪ ওভারে ৪১ রান খরচ করেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। করেছেন শেষ ওভারটিও। দুটি করে উইকেট তানজিম হাসান সাকিব আর মোহাম্মদ আমিরের। মাশরাফি বিন মর্তুজা ৩ ওভারে ৪২ দেওয়ার পর আর বল হাতে নেননি।
এর আগে শুরুতেই ৩ উইকেট হারিয়ে দারুণ বিপদে পড়েছিলো সিলেট স্ট্রাইকার্স। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট যখন অশান্ত হয়ে উঠলো, সঙ্গে জ্বলে উঠলেন বিদেশি ক্রিকেটার টম মুরস। ম্যাচের চিত্রও তাতে বদলে গেলো। ৫ উইকেটে ১৭৩ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেলো সিলেট।
টস জিতে মাশরাফি বিন মর্তুজাকেই ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পাকিস্তানি মোহাম্মদ ওয়াসিমের তোপের মুখে পড়ে সিলেট। ১৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে তারা।
গোল্ডেন ডাকে ফেরেন জাকির হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। অর্থাৎ নিজেদের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান তারা। তৌহিদ হৃদয় দলে ফিরলেও ছন্দে ফিরতে পারেননি। মাত্র ৪ রান করে আউট হয়ে যান।
এরপরই জুটি বাঁধেন আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত এবং ইংলিশ ব্যাটার টম মুরস। দু’জন মিলে ৮১ রানের জুটি গড়েন। ৩০ বলে ৪০ রান করে সাকিব আল হাসানের বলে আউট হয়ে যান মুরস।
এরপর থিসারা পেরেরার সঙ্গে ৬৮ রানের জুটি বাধেন শান্ত। পেরেরা ১৬ বলে করেন ২১ রান। ইমাদ ওয়াসিম উইকেটে নেমে ৫ রান করে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন। ৬৬ বলে ৮৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে অপরাজিত থেকে যান শান্ত। ১১টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কার মার ছিলো তার ব্যাটে।
বরিশালের হয়ে ৩ উইকেট নেন মোহাম্মদ ওয়াসিম এবং ১টি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান ও কামরুল ইসলাম রাব্বি।