বিবিসির তথ্যচিত্র ভারতে প্রদর্শন বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিবিসির তথ্যচিত্র সম্পর্কে মতামত না দিলেও ভারতে ওই তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করছে না। আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস। খবর বিবিসির।

মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ–সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা গোটা বিশ্বে মুক্ত গণমাধ্যমের পক্ষে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মাচরণের স্বাধীনতা মানুষের অধিকার। এ অধিকার গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে আমরা সবসময় এ বিশ্বাসকেই গুরুত্ব দিই। বিশ্বজুড়ে এ নীতি কার্যকর করে তোলার ওপর আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। ভারতের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য।’

universel cardiac hospital

গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে তৈরি বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোশ্চেন’ নিয়ে কোনোরকম মতামত দেওয়ার বিষয়টি গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র সুকৌশলে এড়িয়ে যায়। তথ্যচিত্রের ভালো–মন্দ নিয়ে করা প্রশ্ন এড়িয়ে নেড প্রাইস যুক্তরাষ্ট্র-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবতারণা করে বলেছিলেন, তথ্যচিত্রে কী রয়েছে, সে বিষয়ে তিনি অবগত নন।

তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে যেসব অভিন্ন মূল্যবোধ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রকে কাছাকাছি এনেছে, সেগুলো সম্পর্কে তিনি অবহিত। এসব মূল্যবোধই দুই দেশকে একসূত্রে গেঁথেছে।

নেড প্রাইসের মন্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, তথ্যচিত্রে যা তুলে ধরা হয়েছে, সে বিষয়ে অভিমত না দিলেও সেটির প্রদর্শন বন্ধে ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত ও তৎপরতাকে যুক্তরাষ্ট্র মোটেই অনুমোদন করছে না।

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও ওই তথ্যচিত্র নিয়ে তাঁর অভিমত জানাননি। তিনি বলেছেন, তথ্যচিত্রে সম্মাননীয় ব্যক্তির (নরেন্দ্র মোদি) চরিত্রায়ণ সম্পর্কে সহমত নন। ওই তথ্যচিত্রের প্রতিপাদ্য বিষয়, ২০০২ সালে গুজরাটে তিনদিনের দাঙ্গায় হত্যাকাণ্ডের জন্য তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই দায়ী।

বিবিসি বলেছে, পরিকল্পনামাফিক মুসলমান নিধনই মোদিকে পরবর্তীকালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে সাহায্য করেছে। প্রথম পর্বের পর মঙ্গলবার তথ্যচিত্রটির দ্বিতীয় পর্বও সম্প্রচারিত হয়। তাতে ২০১৪ সালের পর থেকে ভারতের মুসলমানদের সঙ্গে শাসক দল বিজেপির সম্পর্ক কেমন হয়েছে, কীভাবে উত্তরোত্তর বিষিয়ে উঠেছে, তা বিস্তারিতভাবে চিত্রিত।

এদিকে বিবিসির তথ্যচিত্র যাতে ভারতে প্রদর্শিত না হয়, সে জন্য দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইউটিউব ও টুইটারকে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ভারতে প্রদর্শন না করার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন