দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় ফেনীতে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিপাকে পড়েছেন। ফেনী জেলার ৬টি উপজেলায় ৪৪টি মন্দিরে ৪৪টি মন্দিরভিত্তিক প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান চলছে।
প্রত্যেক বিদ্যালয়ে ২০ থেকে ৩০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টা করে এই বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান করা হয়।
হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাবিস্তারে প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে ৩ বছর মেয়াদি মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে সরকারি অর্থায়নে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
২০১২ সাল থেকে ফেনী জেলায় এ প্রকল্পের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এসব বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষকের মাসিক বেতন মাত্র ৫ হাজার টাকা।
ফেনী পৌরসভার সুলতানপুর রক্ষাকালী মন্দিরে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুমি সেন জানান, তিনি মন্দিরভিত্তিক প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের শুরু থেকেই শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু গত ১৮ মাস ধরে তিনি বেতন পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, আমাকে এখন ধারদেনা করে চলতে হচ্ছে। আমি শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখেছি। নিয়মিত করছি।
এ বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক দেবাশীষ চক্রবর্তীর পর্যবেক্ষণ, বিদ্যালয়ে এসে তাদের শিশুরা অনেক কিছু শিখতে পারছে। নিয়মিত শিক্ষার পাশাপাশি তারা ধর্মশিক্ষার সুযোগও পাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিতে। কিন্তু নিয়মিত বেতন না পেয়েও এখানকার শিক্ষকরা যেভাবে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন, তা অসাধারণ। একইসঙ্গে এটি অমানবিকও বটে।