দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারক ‘ক্যানসারের মতো’ মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, কেউ বিচার বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করব না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে শনিবার দুপুরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, জুডিশিয়ালকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দারিদ্র্য, দুর্নীতি, মাদকমুক্ত সমাজ গঠন করতে বিচারক, আইনজীবীসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইনজীবীরা আদালত বর্জনসহ বিচারককে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমন করছেন মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ধারাবাহিকভাবে এটা ঘটলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা বেড়ে যাবে। আদালতের সম্মান রক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব আইনজীবীদের। এরপর বিচারক ও সকল মানুষের। আদালতের সম্মান রাখতে হবে নিজেদের স্বার্থে এবং বিচারপ্রার্থীদের স্বার্থেই। আইনজীবীরা আছে বলেই পৃথিবীতে এখনো শৃঙ্খলা ও ন্যায্যতা আছে।
দুর্বলদের সাহায্য করতে ও তাদের নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হবে কম সময়ে কম খরচে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। নইলে বছরের পর বছর মাসের পর মাস আদালতে ঘুরতে থাকে, তাহলে আদালতের প্রতি অনাস্থা তৈরি হবে। এজন্য দায়ী হবে কে? দায়ী হবেন আইনজীবী, দায়ী হবেন বিচারক। বিচারকের প্রতি কোনো ধরণের অভিযোগ থাকলে, সরাসরি আমার কাছে অভিযোগ করবেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এ টি এম ফজলে রাব্বী ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম। সভাপতিত্ব করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জবদুল হক।
অন্যদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদলতের বিচারক আদীব আলী, জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান, পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিবসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে আইনজীবী সমিতির শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আনন্দ র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে আদালত ও বার ভবন প্রাঙ্গনে বৃক্ষরোপন ও ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি।
এদিকে অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রবীণ আইনজীবি ও মৃত আইনজীবিদের মরণোত্ত সম্মননা প্রদান করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।