বাংলাদেশ নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক যাত্রার চমৎকার বিবরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রায় পাঁচ দশক আগে গবেষণার কাজে বাংলাদেশে আসেন ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক জেফ উড। এরপর বাংলাদেশের সঙ্গে, বিশেষ করে এ দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে বিভিন্ন পরিচয়ে কাজ করেন তিনি। বাংলাদেশে থাকার সময়কার অভিজ্ঞতা নিয়ে জেফ উড একটি বই লিখেছেন।

বাংলাদেশের বিবর্তনের নানা দিক উঠে এসেছে জেফ উডের স্মৃতিচারণামূলক এ বইয়ে। বইতে তিনি দারিদ্র্যের বিষয়টি বাংলাদেশের গণমানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন, যেটা সচরাচর চোখে যায় না।

universel cardiac hospital

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বার্কের ইমেরিটাস অধ্যাপক জেফ উডের লেখা সে বইয়ের নাম ‘স্টেয়িং দ্য কোর্স জার্নি অব অ্যা বেঙ্গল সিভিলিয়ান’। শনিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পার্কে এ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। সেখানে বক্তারা ওই অভিমত ব্যক্ত করেন।

১৯৭৪ সালে নিজের পিএইচডি গবেষণার কাজে প্রথমবার বাংলাদেশে আসেন জেফ উড। পরের পাঁচ দশকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় নানাভাবে যুক্ত থেকেছেন বিশিষ্ট এ সমাজবিজ্ঞানী। বাংলাদেশের বিবর্তন নিয়ে জেফ উডের লেখা স্মৃতিচারণামূলক বইটি প্রকাশ করেছে ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল)।

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, অধ্যাপক জেফ উডের বইটি পড়ে অবাক হয়েছি। তাঁর এ বই দারিদ্র্যের সামাজিক বিবরণী কিংবা আত্মজীবনী হতে পারত। একটি উপন্যাসও হতে পারত। কারণ, তাঁর বইয়ের চরিত্রগুলো আমরা চিনি। বইটিকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। তিনি এই বইতে দারিদ্র্যকে বাংলাদেশের জনগণের ‘লেন্স’ দিয়ে দেখেছেন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান বলেন, বইটিকে বাংলাদেশ নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক যাত্রার চমৎকার বিবরণ হিসেবে অভিহিত করা যায়। ১৯৭৪ সাল থেকে শুরু করে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি বাংলাদেশকে কীভাবে দেখেছেন, তার মূল্যায়ন এটি। ওই সময় থেকে বাংলাদেশের নানা নীতিগত বিতর্ক তিনি বইটিতে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ফেলো এম এ সাত্তার মণ্ডল বলেন, ভূমিহীনদের নিয়ে কীভাবে একজন গবেষক খোলামনে কাজ শুরু করে নিজেকে বিবর্তন করে নিয়েছেন, জেফ উডের স্মৃতিচারণামূলক এ বই তার উদাহরণ। গবেষক হিসেবে তিনি যেভাবে বাংলাদেশকে গ্রামীণ লেন্স দিয়ে দেখেছেন; তা সাধারণত চোখে পড়ে না। তাঁর গল্প বলার ধরন পাঠককে সহজেই আকৃষ্ট করবে। একই সঙ্গে প্রচলিত বাংলা শব্দ পাঠককে একাত্ম করে তুলবে।

শেয়ার করুন