নির্বাসিত লেখকা তসলিমা নাসরিন বলেছেন, বাঙালিরা তাঁর যতো সর্বনাশ করেছে, ততোটা আর কেউ করেনি। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড প্রোফাইলে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা বলেন।
তসলিমা লিখেছেন, ‘আজ ভাবছিলাম, বাঙালিরা আমার যতো সর্বনাশ করেছে, ততো আর কেউ করেনি। আমি মানবতার পক্ষে বই লিখি বলে আমার মাথার দাম ঘোষণা করেছে বাঙালি। আমার মুণ্ডু কেটে নিতে দেশজুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে বাঙালি। আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে কে? বাঙালি। আমাকে আমার দেশ থেকে তাড়ালো বাঙালি।’
তিনি বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা ছেড়ে বাংলা আর বাঙালির টানে দেশের মতো দেখতে ‘দেশ’ পশ্চিমবঙ্গে বাস করতে শুরু করেছিলাম। আমাকে সেখান থেকেও তাড়ালো বাঙালি। পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গে আমার বই নিষিদ্ধ কারা করেছে? বাঙালি। কলকাতা থেকে বের করে দেওয়ার পর আমাকে দিল্লিতে গৃহবন্দি করে কে রেখেছিল? এক বাঙালি। আমাকে ভারত থেকে চিরতরে বের করার জন্য কে আদাজল খেয়ে লেগেছিল? বাঙালি।
তিনি লেখেন, ‘কে জেনেশুনে বিষ পান করিয়েছিল, যে কারণে এইমসের সিসিইউতে ভর্তি হতে হয়েছিল? বাঙালি। আর সেদিন সকালে বলা নেই কওয়া নেই, যখন এক পাঞ্জাবি ডাক্তার আমাকে ভয় দেখিয়ে মিথ্যে কথা বলে আমাকে চাপ দিচ্ছিলেন অপারেশান করতে, আমার নাকি হিপ কেটে ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই, আমি বিশ্বাস করিনি, এক বাঙালি ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছিলাম, তিনি ওই পাঞ্জাবি ডাক্তারের উপদেশ মেনে নেওয়ার জন্য বললেন। আমি বাঙালি ডাক্তারকে বিশ্বাস করলাম, এবং জীবন হারালাম।
তসলিমা আরও লেখেন, বাঙালির ভালোবাসা অনেক পেয়েছি। কিন্তু সব বাঙালি হৃদয়বান, সব বাঙালি সৎ, সব বাঙালি নিঃস্বার্থ- এমন ভাবাটা আমার ভুল ছিল। জানি ভুল, তারপরও বারবারই এই ভুলটি করি। বারবার ঠকেও যদি কারও শিক্ষা না হয়, সে আমি। আমি হয়তো এমনই। তসলিমার এই পোস্টে অনেকেই কমেন্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে ভারতে অবস্থান করছেন বাংলাদেশি এই লেখক।