মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বেইজিং সফর স্থগিতের আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে বাজে অবস্থায় পৌঁছেছিল। সম্পর্ক ঠিক কতটা খারাপ, তা বোঝাতে সাম্প্রতিক বেলুন ওড়ার ঘটনাই তার প্রমাণ। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে বেইজিং সফরের একদিন আগেই বেলুন ইস্যুতে সফর স্থগিত করলেন ব্লিঙ্কেন। অথচ তার এই সফর ঘিরে দুই দেশ সম্পর্ক ঠিক করার প্রহর গুনছিল।
ঠিক এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মনটানার আকাশে একটি বেলুন উড়তে দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, এটি চীনা নজরদারির বেলুন। বেইজিং এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে, বেলুনটিতে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের সরঞ্জাম রয়েছে। এটি কারিগরি ত্রুটির কারণে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে না গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় চলে গেছে। খবর বিবিসির।
চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে গত শুক্রবার টেলিফোনে কথা বলেন ব্লিঙ্কেন। এ সময় ব্লিঙ্কেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনা গোয়েন্দা বেলুনের অনুপ্রবেশ দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। এটা যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী কাজ।
‘বেলুনকাণ্ড’-এর জেরে গতকাল দুঃখ প্রকাশ করেছে বেইজিং। দেশটির দাবি, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠানো এ বেলুন বাতাসে ভেসে পথ ভুল করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মূলত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের জন্য বেলুনটি আকাশে ওড়ানো হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট পথে না গিয়ে সেটি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছে। দেশটির আকাশসীমায় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বেলুনটি উড়ে যাওয়ার এ ঘটনার জন্য বেইজিং অনুতপ্ত।
এ ঘটনায় বেইজিংয়ের দুঃখ প্রকাশ থেকে বোঝা যায়, তারা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর স্থগিত হোক, তা চায়নি। কারণ, গত পাঁচ বছরে কোনো শীর্ষপর্যায়ের মার্কিন কর্মকর্তার এটাই ছিল প্রথম বেইজিং সফর। কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার, তা হয়ে গেছে। চীনের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ব্লিঙ্কেনের সফর স্থগিত ঘোষণা করে।
দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কতটা তলানিতে ঠেকেছে, এ বিবেচনায় ব্লিঙ্কেনের সফর দুইদেশের মধ্যে উদ্যাপনের উপলক্ষ হয়ে উঠেছিল। এখন এটাকে সেই সুযোগ হারানোর বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, এ সফর ছিল কেবল আলোচনার। ব্লিঙ্কেন প্রতিযোগিতার বিষয়টিকে সংঘর্ষে রূপ দেওয়ার বিষয়টি চাননি।