আজ বিশ্ব ক্যানসার দিবস। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতি বছর যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করা হয়। ক্যানসার একটি মারাত্মক ও ভীতিকর রোগ। শরীরের যে কোনো অঙ্গেই এ রোগ হতে পারে। সারা বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ ক্যানসার।
যেসব কারণে ক্যানসার হয় তার ঝুঁকিগুলোর মধ্যে ধূমপান, পান-জর্দা-তামাকপাতা খাওয়া, সবজি, ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া, শারীরিক ব্যায়াম না করা, শারীরিক স্থূলতা বা বেশি ওজন, আলট্রাভায়োলেট রশ্মি, এক্স-রে রেডিয়েশন, কিছু রাসায়নিক পদার্থ, কিছু ভাইরাস বা অন্যান্য জীবাণু অন্যতম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, পরিস্থিতির উন্নতির জন্য মনিটরিং জোরদার দরকার। দেখতে হবে বেশির ভাগ ক্যানসার সেন্টারে মেশিন নষ্ট কেন? মেরামতের লোক নেই কেন? বাজেট অনুযায়ী সেবা দেওয়া হচ্ছে কি? লোকবল কত দরকার এবং এখন কত আছে?
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, অসংক্রামক রোগের মধ্যে ক্যানসার ভয়ানকতম সমস্যা। নিম্নবিত্তদের মধ্যে যারা ক্যানসারে আক্রান্ত তারা অপারেশন করাতে পারে না, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি নিতে পারে না। কারণ এতে অনেক বেশি অর্থের প্রয়োজন হয়।
‘এজন্য আমাদের জাতীয় কর্মকৌশল দরকার। যাদের টাকা নেই, তারাও যেন সুচিকিৎসা পায়। কারণ এটি সংবিধান স্বীকৃত অধিকার। সুতরাং আমাদের উচিত হলো জাতীয় কর্মকৌশল প্রণয়ন করা।’
তিনি বলেন, জাতীয় পরিকল্পনা থাকলে সেখানে ক্যানসার প্রতিরোধ, আক্রান্তদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা, তাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা, যন্ত্রগুলো ঠিক রাখা—সব কিছু থাকত। এখন মানুষ স্বল্পমূল্যে যে চিকিৎসা পাওয়ার কথা, তা পাচ্ছে না। বেসরকারি হাসপাতালগুলো চিকিৎসা দিলেও ব্যয় অনেক। এ থেকে উত্তরণের একটা বড় পথ হলো ক্যানসার রোগীদের বীমার ব্যবস্থা এবং কর্মকৌশল ঠিক করা।
ক্যানসার প্রতিরোধে করণীয়
আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি বছর বিশ্বে এক কোটির বেশি মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। প্রতি পাঁচজনের মধ্যে তিনজন প্রাথমিক উপসর্গগুলো উপেক্ষা করছেন, যা না করলে তাদের সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা ছিল। যতই চিকিৎসাসুবিধা থাকুক, ক্যানসার একবার হলে এর অনেক কষ্ট। এ জন্য প্রতিরোধই হলো সর্বোত্তম।
সাধারণ খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন। চর্বি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার কম খাবেন। ফলমূল ও সবজির পরিমাণ বাড়ান। ধূমপান সম্পূর্ণ ত্যাগ করুন। মদপান পরিহার করুন। মাত্রাতিরিক্ত পরিবেশ দূষণ পরিহার করুন। পান-তামাক বর্জন করুন। যৌনজীবন হতে হবে পরিশীলিত।