৯০ বছর বয়সেও পূর্ণ যৌবনের মতো গান গেয়ে মঞ্চ মাতালেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বাউলশিল্পী রাজবাড়ীর কাঙালিনী সুফিয়া।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে পৌর শহরের আজাদী ময়দানে জেলা শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত সাংস্কৃতিক উৎসবের শেষ ও পঞ্চম দিনে তিনি গান পরিবেশন করেন।
খ্যাতনামা এ শিল্পীর গানে মুগ্ধ হয়ে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইমদাদুল হক বিশ্বাসসহ দর্শকরা উপহার হিসেবে টাকা দেন।
এদিকে বাংলার কৃষ্টি কালচার ও ঐতিহ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে রাজবাড়ীতে ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া পাঁচ দিনব্যাপী বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব রোববার শেষ হয়েছে।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজন ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট রাজবাড়ীর সহযোগিতায় শহরের আজাদী ময়দানে এ উৎসবে জেলা ও ঢাকাসহ প্রায় ৩৫টি সংগঠন গান, নৃত্য, আবৃত্তি, নাটক, পাপেট ও বাদ্যযন্ত্রের ঝনঝনানি উপস্থাপন করেছে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ বলেন, টাকা দিয়ে গুণী শিল্পীর মূল্যায়ন হয় না। এরপরও গানে মুগ্ধ হয়ে সামান্য কিছু টাকা উপহার দিলাম। তবে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে সহযোগিতা করা হবে। উনি ৯০ বছরে যে ভাবে গান গাইলেন, কেউ ৬৫ বছরেও এভাবে পারবে না। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস দূর করা সম্ভব।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহাবুর রহমান শেখ বলেন, রাজবাড়ীবাসী ভাগ্যবান, কাঙালিনী সুফিয়ার মতো একজন গুণী শিল্পীর গান তারা সরাসরি শুনলেন। এ বয়সেও তিনি গান গেয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেন। জেলা প্রশাসন সব সময় তার পাশে আছে। কিছুদিন আগে সাহিত্য মেলায় তিনি গান পরিবেশ করেছেন। সরকার আলীপুরে ইউনিয়নে তাকে একটি বাড়ি করে দেওয়া হয়েছে। এখন তার প্রত্যাশা অনুযায়ী সেখানে সুফিয়া একাডেমি করার জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছে। খুব দ্রুত সেটিও দৃশ্যমান হবে।
সংসদ সদস্য খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন বলেন, আবেগ কাজ করেছে বলে টাকা উপহার দিয়েছি। এছাড়া কিছু না। কাঙালিনী সুফিয়া রাজবাড়ীর গর্ব। বয়স হলেও তিনি গান ভুলেন নাই। এখনো নেচে নেচে গান করেন। আসলে তার কণ্ঠে জাদু আছে।
বাউলশিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া বলেন, আমার বয়স ৯০ বছর। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। এখন আর আগের মতো গাইতে পারি না, তবে চেষ্টা করি। এখন মেয়ে আমাকে সহযোগিতা করে।