আমরা যখন এ সম্পাদকীয় লিখছি, তখনো তুরস্ক-সিরিয়ায় ধ্বংসস্তূপে মানবতার আর্তনাদ। অসংখ্য মানুষ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তাদের প্রিয়জন, স্বজন অপেক্ষা করছেন তাদের বেঁচে থাকা, বা মৃত্যুর সংবাদের অপেক্ষায়। তাদের অসহায় আর্তচিৎকারে সিরিয়া, তুরস্কের আকাশ শোকার্ত। বিশ্ব মানবতা হতবিহ্বল সেখানকার ভয়াবহতায়।
গত সোমবারের ভূমিকম্পে দেশ দুটিতে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের প্রতি মত ও পথ পরিবারের পক্ষে আমরা জানাই গভীর শোক। আহতদের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা। যারা ভয়াল দুর্যোগের পর বেঁচে থাকার সংগ্রাম করছেন, তাদের প্রতি জানাই সংহতি।
তুরস্ক ও সিরিয়ার বেদনাদায়ক মুহূর্তে শোকাহত হৃদয় নিয়ে দেশ দুটির পাশে আছে বাংলাদেশ। ভূমিকম্পে সৃষ্ট মানবিক সংকটের প্রেক্ষাপটে দেশ দুটিকে সহায়তা করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। দেশ দুটিতে উদ্ধারকারী দল, চিকিৎসক, ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।
তুরস্ক, সিরিয়ায় বিপুল প্রাণহানির ঘটনায় দেশে আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় শোক কর্মসূচি পালন করা হয়। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ভূমিকম্পে পর্যুদস্ত তুরস্ক সহায়তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের কাছ থেকে খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধ চেয়েছে। ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত আজ বিকেলে তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ থেকে সহায়তাসামগ্রী নিতে চাই। আমাদেরকে শীতের কাপড়, ওষুধ, শুকনা খাবার ইত্যাদি সহায়তা দিতে পারেন। ঢাকার টার্কিশ কো–অপারেশন অ্যান্ড কো–অর্ডিনেশন এজেন্সির (টিকা) কার্যালয় এসব সহায়তা নেবে। তারা এসব সামগ্রী তুরস্কে পাঠাবে।’ সরকার ও জনগণ তুরস্কের অনুরোধে দ্রুত সাড়া দেবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় মানবিক বিপর্যয়ের এমন পরিস্থিতিতে শোকবার্তা পাঠিয়ে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন বিশ্বনেতারা। বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন তুরস্কের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। বিশ্বের সমন্বিত ও গোষ্ঠীগত প্রচেষ্টা ছাড়া দেশ দুটির বিপর্যয় থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। তাই দেশ দুটির পাশে দাঁড়াতে আমরা বিশ্ব নেতৃত্ব ও বৈশ্বিক সংস্থাগুলোকে অনুরোধ করছি।