আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ পেতে দৌড়ঝাঁপ করছে নগদ অর্থ সংকটে ভোগা পাকিস্তান। ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করতে দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে গত ৩১ জানুয়ারি ১০ দিনের সফরে আসে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ছিল এ সফরের শেষ দিন। কিন্তু পাক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, টানা ১০ দিন আলোচনা চললেও আইএমএফের সঙ্গে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি দেশটির সরকার। আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটির প্রতিনিধি দল পাকিস্তান ছাড়বে।
তবে পাকিস্তানের অর্থ সচিব হামেদ শেখ জানিয়েছেন, ঋণের পূর্বশর্ত পূরণ নিয়ে একটি চুক্তি আইএমএফের সঙ্গে হয়েছে। কিন্তু আরও কিছু শর্ত এখনো পূরণ করতে হবে।
আইএমএফের কাছ থেকে ২০১৯ সালে ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার আবেদন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তখন আইএমএফ এ ঋণ দিতে সম্মত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে করোনা মহামারীর কারণে ঋণ বিতরণ থমকে যায়। মহামারী শেষে আবারও কার্যক্রম শুরু হলেও পাকিস্তান সরকার শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় এ ঋণ এখনো আটকে আছে।
প্রতিশ্রুত ৬ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার গত বছরের ডিসেম্বরে পাকিস্তানেকে দেওয়ার কথা ছিল আইএমএফের। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সময়মত ঋণ না পাওয়া গেলে পাকিস্তানের অর্থনীতে ধস নামবে।
এদিকে আইএমএফ ঋণ ছাড় করতে যেসব শর্ত দিয়েছে সেগুলোকে ‘অভাবনীয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।
আইএমএফ মূলত পাকিস্তান সরকারকে শর্ত দিয়েছে সব সেক্টরে কর বৃদ্ধি করতে হবে, জ্বালানিতে ভর্তুকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে আইএমএফের শর্ত মানতে গড়িমসি করছে শেহবাজ শরীফ সরকার। কারণ শর্ত মানলে পাকিস্তানে নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে। যা শেহবাজ শরীফের জন্য একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।
এদিকে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবারও বৈদশিক রিজার্ভ নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে। বৃহস্পতিবার সর্বশেষ তথ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বৈদশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।