স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দক্ষিণ তুরস্কে অস্থিরতায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে তিনটি উদ্ধারকারী দল।
ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে এবং কিছু অলৌকিক উদ্ধার সত্ত্বেও আরও অনেক জীবিতকে খুঁজে পাওয়ার আশা ম্লান হয়ে যাচ্ছে। তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট, ফুয়াত ওকতে শনিবার ঘোষণা দিয়েছেন যে তুরস্কে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ হাজার ৬১৭ হয়েছে।
জার্মান উদ্ধারকারীরা এবং অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনী শনিবার নাম না জানা গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে অনুসন্ধান অভিযান স্থগিত করে।
একজন উদ্ধারকারী বলেছেন, খাদ্য সরবরাহ কমে যাওয়ায় নিরাপত্তা আরও খারাপ হতে পারে।
স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, প্রায় ৫০ জনকে লুটপাটের অভিযোগে গ্রেপ্তার এবং বেশ কয়েকটি বন্দুক জব্দ করা হয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, কেউ আইন ভঙ্গ করলে তিনি জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করবেন।
অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র শনিবার সকালে বলেছেন, হাতায় প্রদেশে অজ্ঞাত গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ফলে অস্ট্রিয়ান ফোর্সেস ডিজাস্টার রিলিফ ইউনিটের কয়েক ডজন কর্মী অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে একটি বেস ক্যাম্পে আশ্রয় চেয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল পিয়েরে কুগেলওয়েস এক বিবৃতিতে বলেছেন, তুরস্কে দলগুলোর মধ্যে আগ্রাসন বাড়ছে।
অস্ট্রিয়া তার উদ্ধার প্রচেষ্টা স্থগিত করার কয়েক ঘণ্টা পরে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তুর্কি সেনাবাহিনী সুরক্ষা দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে, উদ্ধার অভিযান পুনরায় শুরু করার অনুমতি দিয়েছে।
সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ গ্রুপ আইএসএআর এবং জার্মানির ফেডারেল এজেন্সি ফর টেকনিক্যাল রিলিফ (টিএসডব্লিউ) এর জার্মান শাখাও নিরাপত্তা উদ্বেগ উল্লেখ করে অপারেশন স্থগিত করেছে।
আইএসএআর-এর মুখপাত্র স্টেফান হাইন বলেন, বিভিন্ন দলের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে, গুলিও চালানো হয়েছে।
ইসারের অপারেশন ম্যানেজার স্টিভেন বেয়ার বলেছেন, আমরা খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করছি, নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তুর্কি কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিরাপদ মনে করার সঙ্গে সঙ্গে জার্মান উদ্ধারকারী দলগুলো আবার কাজ শুরু করবে।
যদিও তুরস্কের রাষ্ট্রপতি, রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান হাতায়ের অস্থিরতার বিষয়ে মন্তব্য করেননি, তিনি শনিবার পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে সরকার এই অঞ্চলে অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
এরদোগান দুর্যোগ অঞ্চল পরিদর্শনের সময় বলেন, ‘আমরা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছি। এর মানে, এখন থেকে যারা লুটপাট বা অপহরণের সঙ্গে জড়িত তাদের জানতে হবে যে তাদের পিঠে রাষ্ট্রের শক্ত হাত রয়েছে।’
শনিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, লুটপাটের অভিযোগে ৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নগদ অর্থ, গহনা এবং ব্যাংক কার্ডসহ বেশ কয়েকটি বন্দুক জব্দ করা হয়েছে।