নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে গ্রেফতার করে শিবপুর মডেল থানা পুলিশ। শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাকে নরসিংদীর আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। কিন্তু শিবপুর থানা থেকে আদালতে নেওয়ার পথে দেখা যায় অন্যান্য আসামির ন্যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারের হাতে হাতকড়াসহ কোমড়ে রশি বাঁধা। আদালত প্রাঙ্গণে হাতকড়াসহ কোমরে রশি বাধা অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা আবু ছালেক রিকাবদারের বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে।
এদিকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করে হাতে হাতকড়াসহ কোমরে রশি দিয়ে বেধে আদালতে প্রেরণ করায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন শিবপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজসহ সাধারণ জনতা।
এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল মোতালিব খান বলেন, আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যেভাবে কোমরে রশি বেধে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করা হয়েছে তা খুবই দুঃখজনক।
শিবপুর উপজেলার যুদ্ধাকালীন কমান্ডার প্রফেসর আব্দুল মান্নান খান বলেন, আবু ছালেক রিকাবদার একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা। তাকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করে হাতে হাতকড়াসহ কোমরে রশি বেধে আদালতে প্রেরণের ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক কাজ। এই ঘটনার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। আমি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহসীন নাজির বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাক আবু ছালেক রিকাবদার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ওনাকে গ্রেফতারের বিষয়টি উপজেলা আওয়ামীলীগ অবগত নয়। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে হাতকড়া পড়ানোর পরেও কোমরে রশি বাধা খুবই লজ্জার।
শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশীদ খান বলেন, রাজনৈতিক মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে গ্রেফতার করতেই পারে, কিন্তু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হাতে হাতকড়া থাকার পরেও কোমরে রশি বাধা খুবই দুঃখজনক। আবু ছালেক রিকাবদার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কোমরে রশি বাধা সম্পর্কে জানতে চাইলে শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, রাজনৈতিক মামলায় আবু ছালেক রিকাবদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে কোমড়ে রশি বাধার বিষয়টি আমার জানা নেই, তার সাথে যারা ছিল তারাই বলতে পারবে কেন তাকে এভাবে আদালতে তোলা হলো।
উপজেলা বিএনপি ও আবু ছালেক রিকাবদারের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। আর এই কর্মসূচি শিবপুরে যাতে বাস্তবায় না হয় সে জন্যই আতঙ্ক সৃষ্টি করার লক্ষে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদককে শিবপুরের নিজ বাসার সামনে থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পুলিশ জানায়, পূর্বে আবু ছালেক রিকাবদারের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তাকে গ্রেফতার করেছে তারা।