এবার ঢাকা থেকে সৌদি আরবে হজযাত্রী পরিবহন করবে তিনটি এয়ারলাইন্স। এর একটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। অন্য দুটি হলো সৌদি আরবের সৌদিয়া এয়ারলাইন্স ও ফ্লাইনাস। এই তিনটি এয়ারলাইন্সে এবার এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ হজযাত্রী পরিবহন করার কথা রয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি এই তিনটি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট সূচি চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী মোট যাত্রীর অর্ধেক বহন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বাকি অর্ধেক করবে সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস। তবে ডলারের দাম বাড়ায় এবার বিমান ভাড়া অনেকটাই বেড়েছে।
এদিকে প্লেন ভাড়াসহ হজ প্যাকেজের মূল্য কমাতে পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্র্যাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য ৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ ও সৌদি সরকারের দ্বিপক্ষীয় হজ চুক্তি হয়।
এবার নিজেদের বহরে থাকা বোয়িং ৭৭৭ প্লেনে হজযাত্রী আনা-নেওয়া করবে বিমান বাংলাদেশ। চলতি বছর হজযাত্রী বেশি হওয়ায় ফ্লাইটও বেশি হবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্লেন ভাড়া কমানোর দাবি
১৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া এক চিঠিতে প্লেন ভাড়াসহ হজ প্যাকেজের মূল্য কমানোর দাবি জানিয়েছে আটাব।
প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুসারে ২০১৫ সালে হজের সর্বনিম্ন খরচ ছিল ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকা। ২০১৬ সালে ছিল ৩ লাখ ৪ হাজার টাকা। ২০১৭ সালে সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল ৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা। ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে হজ যাওয়া বন্ধ ছিল।
এরপর ২০২২ সালে হজ প্যাকেজের মূল্য ছিল ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা এবং ২০২৩ সালে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হিসাব বিবেচনায় নিলে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে হজের ব্যয় বেড়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৫ টাকা। অথচ এ বছর হজের আনুষঙ্গিক ব্যয় কমিয়েছে সৌদি সরকার।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০১৭-২২ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে হজ যাত্রীদের নির্ধারিত প্লেন ভাড়া ক্রমাগতভাবে বেড়েছে। ২০২৩ সালে আগের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে প্লেন ভাড়া। ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে হজ প্যাকেজের মূল্য বেড়েছে। বর্তমানে সৌদি রিয়ালের মূল্য হিসাব করে সৌদি আরবের খরচ নির্ধারণ করা হলেও, হজের সময় রিয়ালের মূল্য টাকার বিনিময় মূল্যের হার বৃদ্ধি পাবে বলে সম্ভাবনা রয়েছে।
আটাবের চিঠিতে আরও বলা হয়, বিশ্বে আর্থিক মন্দার কারণে যে ডলার সংকট বিরাজ করছে তার প্রভাবে হজ যাত্রীদের আর্থিক চাপ আরও বাড়বে। ভবিষ্যতে এর ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ থেকে মুসল্লিরা হজ করতে যাওয়ার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলবেন। প্লেন ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারিত করা হলে হজ যাত্রীদের আর্থিক ও মানসিক চাপ অনেকটাই হ্রাস পাবে।
এজন্য আটাব সভাপতি এস এন মঞ্জুর মোর্শেদ প্লেন ভাড়াসহ প্যাকেজ মূল্য পুনর্বিবেচনা করতে আহ্বান জানান।