আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কেন্দ্র করে ঝিনাইদহের ফুল চাষিরা ব্যাপক লাভের মুখ দেখেছেন। দিবসটি ঘিরে প্রায় ৮ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছেন তারা। আর শুধুমাত্র ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারিতেই এই জেলা থেকে প্রায় শত কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগ ।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের ফুল চাষী ইসলাম উদ্দীন বলেন, এই দিবসকে কেন্দ্র করে আমাদের ইউনিয়নের প্রায় ২৫০০ ফুল চাষীর ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। আমাদের ফুল সারা দেশের মধ্যে সেরা। কারণ প্রকৃতিগতভাবেই আমাদের ফুলের পাপড়ি মোটা, আকারে ও গন্ধে সেরা । সে কারণে আমাদের ফুল অন্য জেলার ফুলের থেকে অন্তত ৪৮ ঘণ্টা বেশি তাজা থাকে। তাই সারা দেশে এই ফুলের চাহিদাও ব্যাপক।
গান্না বাজার ফুল চাষী ও ব্যবসায়ীরা জানান, গত ৩ দিনের প্রত্যেকটা দিনে ৫০-৬০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর পুরো জেলায় ফুলের চাষ হয়েছে ২৫৪ হেক্টর জমিতে। গতবছর ৬৮ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছিল।
ঝিনাইদহ ফুলচাষী সমবায় সমিতির সাধারণ সভাপতি জামির হোসেন জানান, এ বছর ফুলের দাম ভালো পেয়েছেন চাষিরা। ডিসেম্বর ও এ মাসে প্রায় শত কোটি টাকার ফুল ঝিনাইদহ থেকে ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। ৮ কোটি টাকার ওপর ব্যবসা হয়েছে শুধুমাত্র একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে।
তিনি আরও জানান, জেলার কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর ও সদর উপজেলার প্রায় ১০টি বাজার থেকে প্রতিদিন এ ফুল ছড়িয়ে পড়ছে সমগ্র বাংলাদেশে।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) আজগর আলী বলেন, ফুল এখন ব্যাপক লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। খুলনার ১০ জেলার মধ্যে ঝিনাইদহে সবচেয়ে বেশী গাঁদা ফুলের চাষ হয়। এছাড়া, গোলাপ, রজনীগন্ধা, জারবেরা, লিলিয়ামসহ বিভিন্ন ধরনের স্টিক ফ্লাওয়ার ও চন্দ্রমল্লিকাসহ সব ধরনের ফুলের চাষ দিনের পর দিন বাড়ছে। ফলন ভালো পেতে প্রশিক্ষণসহ কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা। ডিসেম্বর থেকে ফুলের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে।