লক্ষ্য ছিল নারীদের টি-২০ বিশ্বকাপে অন্তত একটি ম্যাচে জয়। কিন্তু আগের তিন ম্যাচে হারের পর শেষ ম্যাচেও একই আশা নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। সেই আশা আর পূরণ হয়নি। নিগার সুলতানার দল চার ম্যাচেই বড় হার দেখেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে প্রোটিয়ারা।
এ নিয়ে ২০১৪ সালের পর থেকে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটটিতে কোনো জয় ছাড়াই মাঠে ছেড়েছেন দেশের টাইগ্রেসরা। একইসঙ্গে তারা টানা ১৬ ম্যাচে হারার নজিরও স্থাপন করেছেন।
বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করেছিল বাংলাদেশ। দুটোতেই শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়া তাদের বড় ব্যবধানে হারায়। তৃতীয় ম্যাচে টসে হারায় হয়তো আগে ব্যাট করার সুযোগ পায়নি। তবে ম্যাচের ফল বদলায়নি। নিউজিল্যান্ড সেই ম্যাচে নিগারদের হারায় ৭১ রানে। বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচেও টস জিতে বাংলাদেশ। কিন্তু আগে ব্যাট করে প্রতি ম্যাচের ন্যায় তাদের ভঙ্গুর ব্যাটিং জয়ের স্বপ্ন দেখার মতো টার্গেট দিতে পারেনি। তাদের ১১৩ রানের ছোট পুঁজি প্রোটিয়ারা কোনো উইকেট না হারিয়েই পেরিয়ে যায়। তাদের হাতে ছিল আরও ১০ বল।
দুই ওপেনার শামিমা সুলতানা ও মুর্শিদা খাতুন শুরুতেই হতাশ করেছেন। আফ্রিকান পেসার মারিজানে কাপকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন মুর্শিদা। মিড অফে দারুণ ডাইভে ক্যাচটি নেন নাদিন ডি ক্লার্ক। বাজে ফর্ম কাটানো মুর্শিদা ৬ বলে শূন্য রানেই ফিরেছেন। এরপর দুই ওভারে মাত্র ৭ রান নেওয়ার পর ধৈর্য আর কুলোয়নি ব্যাটারদের। ষষ্ঠ ওভারে শবনম ইসমায়েলকে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন শামিমা। পাওয়ার প্লেতে তাদের সংগ্রহ ২৩ রান।
পরবর্তীতে সোবহানা মুশতারিকে সঙ্গে নিয়ে ৪১ বলে ৩৩ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক নিগার। কিন্তু ৩০ বলে ২৭ রানে ফেরেন মুশতারি। তার সুইপ করার চেষ্টা আগেই খেয়াল করেছেন বোলার মালাবা। এরপর নিগার স্কোর বাড়াতে থাকেন স্বর্ণা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে। দুজনের জুটিতে ২১ বলে ২৫ রান আসে। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ নিগার ৩০ রান করেন।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের হয়ে ম্যারিজেন ক্যাপ ও আয়াবোঙ্গা খাকা ২টি এবং ইসমায়েল ও মালাবা নেন একটি করে উইকেট।
ছোট টার্গেট তাড়া করতে নেমে দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই প্রোটিয়া ওপেনার। যেন তাদের কোনো তাড়া নেই। ১ ছক্কা ও ৭ চারে তার ৫৬ বলে ৬৬ রানের অপরাজিত ইনিংসের সামনে অসহায় ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। আরেক ওপেনার তাজমিন ব্রিটসও কম যাননি। ৪ চারে ৫১ বলে ৫০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। দুজনকেই আউট করার সুযোগ হারিয়েছে বাংলাদেশ। ফিল্ডারদের কল্যাণে ব্রিটস ক্যাচ আউট এবং ভলভার্ট রান আউটের শঙ্কা থেকে বেঁচে যান।
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ম্যাচটা ছিল কার্যত নক আউট। জিতলেই সেমিফাইনাল। ১৩ বল হাতে রেখে তুলে নেওয়া জয়ে সেটাই নিশ্চিত করেছে সিনা লিসের দল। দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠল। তার আগেই সেমিতে পা রাখে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ড।