টানা দ্বিতীয়বার নিম্ন জন্মহারে বিশ্ব রেকর্ড করল দক্ষিণ কোরিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রতীকী ছবি। ইন্টারনেট সূত্রে সংগৃহীত

২০২১ সালের মতো ২০২২ সালেও বিশ্বের নিম্ন জন্মহারপ্রবণ দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে জন্মহার আরও কমেছে দেশটির।

বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি পরিসংখ্যান দপ্তর ‘স্ট্যাটিকটিকস কোরিয়া’ এক নথিতে দেশটির জন্মহার সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে। নথি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ২০২১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার জন্মহার ছিল মাত্র ০.৭৮। অন্যদিকে, ২০২১ সালে এই হার ছিল ০.৮১।

universel cardiac hospital

নথিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্ম নিয়েছিল প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার শিশু; আর গত বছর, ২০২২ সালে এই সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় ২ লাখ ৪৯ হাজার জনে।

মার্কিন বার্তাসংস্থা সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের তালিকাভুক্ত ২৬০টিরও বেশি দেশের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার জন্মহার সবচেয়ে নিম্ন।

একটি দেশের মোট জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখতে ওই দেশের জন্মহার অন্তত ২.১ থাকা জরুরি। কিন্তু দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে ২০১৫ সাল থেকেই জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে। ২০২০ সালে দেশটিতে যতসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, জন্ম নিয়েছে তার চেয়েও কমসংখ্যক শিশু।

দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মহার বৃদ্ধির জন্য ২০০৬ সাল থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। গত ১৬ বছরে এই বাবদ দেশটির সরকারের ব্যয় হয়েছে ২৮০ ট্রিলিয়ন ওয়োন বা ২১০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু কিছুতেই জন্মহার বাড়ছে না দেশটির, বরং বছর বছর তা কমছে।

অর্থনৈতিক দিক থেকে বিবেচনা করলে এ ব্যাপারটি বেশ উদ্বেগজনক। কারণ গড় হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতিতে প্রতি বছর এক একজন নাগরিক প্রায় ৩০ হাজার ডলার যোগ করেন। যদি জন্মহার না বাড়ে, সেক্ষেত্রে অদূর ভবিষ্যতে দেশটিতে তীব্র কর্মী সংকট শুরু হবে।

দেশটির সমাজবিজ্ঞানী ও জনসংখ্যাবিদদের মতে, আবাসনের উচ্চব্যয়, নারী-পুরুষের সামাজিক ও লৈঙ্গিক অসমতা, পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনের অভাব, শিশুদের লালন-পালনের উচ্চব্যয় এবং খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ ও ব্যয়বহুল শিক্ষাব্যবস্থার কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার দম্পতিরা সন্তান নেওয়ার ব্যাপারে দিন দিন নিরুৎসাহিত হচ্ছে।

এছাড়া অধিকাংশ কোরীয় নারীর দেরিতে গর্ভধারণের প্রবণতাও দেশটির জন্মহার হ্রাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

শেয়ার করুন