ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীসহ পাঁচ জনের সিট বাতিল করেছে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল প্রশাসন। ইবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাবাসসুম, হালিমা খাতুন উর্মি, ইশরাত জাহান মীম ও মায়োবিয়ার সিট বাতিল করে স্থায়ীভাবে তাদের আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) তদন্ত কমিটির সঙ্গে আলোচনা শেষে বিকেল চারটায় এ তথ্য জানান হলের আবাসিক শিক্ষক ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আহসানুল হক।
তিনি বলেন, উর্মি নামে মেয়েটি তার ফোন হারিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ওই ফোনে ভিডিও করা হয়েছিল। সেটি উদ্ধারে প্রক্টর অফিসকে অনুরোধ জানিয়ে পত্র দেওয়া হবে।
এছাড়া, হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আগামী ১ মার্চ দুপুর ১২টার ভেতর তাদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ আরও সাত-আটজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করন ভুক্তভোগী। ঘটনা তদন্তে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া ১৫ ফেব্রুয়ারি আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শাখা ছাত্রলীগ।
এদিকে, এ ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী গাজী মো. মহসীন ও আজগর হোসেন তুহিন। তখন তাদের লিখিত আবেদন দিতে বলেন আদালত। সে অনুসারে তারা জনস্বার্থে রিট করেন।
পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি রিটের শুনানি শেষে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এরই মাঝে গত ১৮, ২০ ও ২২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন কমিটির ডাকে মোট তিনবার পৃথকভাবে ক্যাম্পাসে এসে সাক্ষাৎকার দেন ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তরা। রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি।