পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ, হামলা, অগ্নিসংযোগের তিন দিন পেরিয়ে গেছে। এরই মধ্যে গত শুক্রবার গুলিতে এক তরুণ ও বিক্ষোভকারীদের আঘাতে অপর এক তরুণের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। তবে গতকাল শনিবার রাতে তিনটি মামলা হয়েছে বলে আজ রোববার দুপুরে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা।
মামলাগুলোতে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে গতকাল বিকেলে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের পক্ষে সালানা জলসার আহ্বায়ক আহমদ তবশির চৌধুরী পঞ্চগড় সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। আজ দুপুরে তিনি জানান, আজ দুপুরে তাকে থানা থেকে জানানো হয়েছে তাদের দেওয়া এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে।
এদিকে গতকাল রাতে দুজনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে এমন গুজব ছড়ানোর দায়ে দুজন, নাশকতাকারীদের মধ্যে ১৯ জন এবং আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারী জাহিদ হাসানের (২৩) হত্যাকারীদের মধ্যে দুজনসহ মোট ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজন হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার।
আজ দুপুর ১২টায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সংশ্লিষ্ট এলাকা আহমদনগর ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়েছে তাদের। রাতে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পাটি বিছিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করেছেন। তবে আবারও হামলার কথা শুনে রাতে মসজিদে গিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করেছেন তারা। এখন পর্যন্ত কারও কাছে কোনো সহায়তা পাননি। একদিকে খাবারের কষ্ট, অন্যদিকে এক কাপড়ে রয়েছেন তারা।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। তবে বিষয়টি বিভাগীয় পর্যায় থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সেখান থেকে নির্দেশনা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে সকাল ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের নিয়ে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার বিষয়ে একটি সভা হয়েছে বলে জানান তিনি।