নারী–পুরুষ সমতার বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। এ সমতা অর্জন এখনো অনেক দূরের ব্যাপার। সবমিলিয়ে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে আরও অন্তত ৩০০ বছর লাগবে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার ইউএন উইমেনের এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মাতৃমৃত্যু, বাল্যবিবাহ, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়া, অপরহরণ-নির্যাতনের শিকারসহ নারীদের নানা বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আসলে বিশ্বজুড়েই নারীদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এসব প্রমাণ করে, নারী–পুরুষের সমতা অর্জনের অগ্রগতি দিনদিন শুধু দূরেই সরে যাচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে নারীদের অধিকার থেকে বঞ্চিত, লাঞ্ছিত করা হচ্ছে ও হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে উল্লেখ করে গুতেরেস আফগানিস্তানসহ কিছু দেশের নাম উচ্চারণ করেন। এসব দেশে নারী ও মেয়ে শিশুদের ভয়াবহ অবস্থার কথা বর্ণনা করে তিনি বলেন, তাদেরকে জনজীবন থেকে আলাদা করে রাখা হচ্ছে। কিছু দেশে স্কুলে যাওয়া মেয়েরা অপহরণ ও হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে।
গুতেরেস আরও বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা পিতৃতন্ত্র, বৈষম্য ও নেতিবাচক মানসিকতা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো খাতগুলোতে নারী-পুরুষের মধ্যে বিশাল ব্যবধান তৈরি করেছে। তার মতে, নারী–শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সংকট ও সংঘাতের কারণে। আর এ ধরনের পরিস্থিতির উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেন।
নারী ও মেয়ে শিশুদের অধিকার নিয়ে বিশ্ব যেন একপ্রকার চুপ করে আছে। এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, সুশীল সমাজকে এ বিষয়ে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।
গত বছর জাতিসংঘের নারী অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউএন ওম্যান জানায়, বর্তমান অগ্রগতির যে হার, তা অব্যাহত থাকলে বিশ্বের সব দেশ থেকে নারীর ওপর বৈষম্যবিষয়ক যাবতীয় আইনের বিলোপ ঘটতে সময় নেবে অন্তত ২৮৬ বছর। ১৪০ বছর লাগবে কর্মক্ষেত্রে পুরুষের সমমর্যাদা, বেতন, ক্ষমতা ও নেতৃত্বে আসতে। এছাড়া রাজনীতি ও পার্লামেন্টে পুরুষ জনপ্রতিনিধিদের সমকক্ষ হতে নারীদের সময় লাগবে কমপক্ষে আরও ৪০ বছর।
সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট