বাখমুতে পাল্টাপাল্টি হামলায় ইউক্রেন-রাশিয়ার শত শত সেনা নিয়ে নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেনের দোনবাসের বাখমুত শহর ঘিরে আক্রমণ জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। অন্যদিকে পাল্টা হামলার মাধ্যমে প্রতিরক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেনও।

শনিবার (১১ মার্চ) এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ও রাশিয়া দাবি করেছে, বাখমুত শহরের লড়াইয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় শত শত শত্রু সেনা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইউক্রেনীয় সেনারা রাশিয়ার অবিরাম আক্রমণ প্রতিরোধ করছে বলেও দাবি করেছে কিয়েভ। খবর রয়টার্সের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাখমুতে ইউক্রেনীয় সেনাদের হামলায় শনিবার মস্কোপন্থি ২২১ জন সেনা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র সেরহি চেরেভাতি।

তিনি বলেন, বাখমুতে মস্কোপন্থি ২২১ সেনা নিহত এবং ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অংশের বৃহত্তর সম্মুখসমরে ২১০ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন। যদিও এর মধ্যে বাখমুত তাদের হামলায় ঠিক কতজন ইউক্রেনীয় সেনা হতাহত হয়েছে সেটি উল্লেখ করেনি মস্কো।

মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের বাখমুত শহরটি বছরব্যাপী যুদ্ধের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী এবং দীর্ঘতম যুদ্ধের স্থান বলে বিবেচিত হচ্ছে। এ ছাড়া জোরদার রুশ হামলা এবং ইউক্রেনের প্রতিরোধের জেরে এই শহরটি এখন প্রায় জনশূন্য।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেন বাখমুতে ক্ষতির মুখে পড়ার কথা স্বীকার করেছে এবং পাল্টাপাল্টি হামলায় প্রতিপক্ষের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির দাবি করেছে তার পরও হতাহতের সঠিক সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা কঠিন।

ব্রিটিশ সামরিক গোয়েন্দারা শনিবার বলেছেন, রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার গোষ্ঠী বাখমুতের পূর্বাঞ্চলের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। চলমান যুদ্ধে এটি রাশিয়ার জন্য বেশ বড় অর্জন, যা গত বুধবার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন দাবি করেছেন।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তার দৈনিক গোয়েন্দা বুলেটিনে বলেছে, ‘শহরের কেন্দ্রে, বখমুটকা নদী এখন সম্মুখসমরের স্থানে পরিণত হয়েছে।’

ইউক্রেন অবশ্য জোর দিয়ে বলছে, তারা বাখমুতে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে এবং রাশিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধ’ নিচ্ছে। বাখমুতকে রক্ষা করার দায়িত্বে থাকা ইউক্রেনের কমান্ডার বলেছেন, বাখমুত শহরের সুরক্ষার জন্য ইউক্রেনীয় পাল্টা হামলা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

কর্নেল জেনারেল ওলেক্সান্ডার সিরস্কিকে উদ্ধৃত করে সামরিক বাহিনী শনিবার বলেছে, ‘রিজার্ভ সেনা সংগ্রহ করতে এবং পাল্টা আক্রমণ শুরু করার জন্য সময় প্রয়োজন, যা (সেটি পাওয়া) খুব বেশি দূরে নয়।’

মস্কো বলেছে, বাখমুতকে দখল করা হলে সেটি ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় বড় ধরনের চিড় ধরাবে এবং পুরো দোনবাস শিল্প অঞ্চলকে দখলের দিকে রাশিয়াকে আরও এগিয়ে দেবে। যদিও কিয়েভ বলেছে, বাখমুতের এই যুদ্ধ রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সেরা ইউনিটগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

শেয়ার করুন