মানুষের অধিকার পাওয়ার জন্য লড়াই শুরু করেছেন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই লড়াইয়ে আমরা অনেক দূরে এগিয়েছি। প্রতিদিন এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অতি শিগগির এই লড়াইয়ে জয়ী হবো।
শুক্রবার দুপুরে ডিআরইউতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও আন্দোলনে নিহত হওয়া বিএনপি নেতাদের স্মরণে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, লড়াই শুরু করেছি, অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। একটা আধুনিক, কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা লড়াই করছি। মানুষের অধিকার পাওয়ার জন্য লড়াই শুরু করেছে, ন্যায় বিচারের জন্য।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে আসতে ইচ্ছা করে না। গত ১৫ বছর ধরে এই ধরনের অনুষ্ঠানে আমরা আসি। কষ্ট পাই, পরিবারগুলো কষ্ট পায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা তাদের জন্য খুব বেশি কিছু করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের আন্দোলন তো করার কথা না। আমরা আন্দোলন করেছি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। যারা আমাদের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছিল, গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছিল। একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করছিল না। যে কারণে একটা যুদ্ধ হয়েছে। সেই যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করেছি। একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। আমাদের দুর্ভাগ্য সেই গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য আবারো লড়াই করতে হচ্ছে, প্রাণ দিতে হচ্ছে।
দেশের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশ যে এই পরিস্থিতিতে পড়বে, তা আমরা কখনো ভাবিনি। মাঝে মাঝে মনে হয় এ কেমন দেশ আমরা তৈরি করলাম? যে দেশে মানুষের সম্মান থাকবে না, যে দেশের মানুষের প্রাণের কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না, বেঁচে থাকার কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না। আমি আমার ভোট দিতে পারবো না, সেখানে আমি আমার কথা বলতে পারবো না, আমার প্রতি অন্যায় হবে সে কথা বলতে পারবো না, আইনজীবীরা কোর্টে পুলিশের হাতে পিটানি খাবেন। সেই দেশটা আমরা চিন্তা করিনি, কোনোদিন ভাবিওনি।
সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, বিচারপতির কাছে গিয়েছিলেন আমাদের আইনজীবীরা। তিনি বলেছেন ‘আমার যদি কিছু করার থাকে তাহলে আমি করবো।’ তিনি যদি এ কথা বলেন তাহলে কোথায় যাবো আমরা? কার কাছে যাবো আমরা? এদেশের মানুষ কোথায় যাবে?
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অনেকে স্বামী হারিয়েছেন, বাবা হারিয়েছেন, ছেলে হারিয়েছেন, ভাই হারিয়েছেন। মানব সভ্যতার ইতিহাস বলে আত্মত্যাগ কোনোদিন বৃথা যাবে না। তাদের রক্তের স্রোত, মায়ের অশ্রু ধারা কখনো বৃথা যেতে পারে না।
‘অর্পণ বাংলাদেশে’র চেয়ারম্যান বিথীকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।