হজ নিবন্ধনের সময় আরও বাড়তে পারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

হজযাত্রী নিবন্ধন
ফাইল ছবি

চার দফা বাড়ানোর পর মঙ্গলবারই (২১ মাস) শেষ হচ্ছে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়। সময় শেষ হতে চললেও এখনও কোটা পূরণ হয়নি। ফলে নিবন্ধনের সময় আরও কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।

২১ মার্চ (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে ৮টার তথ্য অনুযায়ী, কোটা পূরণে আরও সাড়ে ১১ হাজার হজযাত্রীর নিবন্ধন বাকি রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সন্ধ্যায় ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, আমি এখন নাটোরে আছি। রাতে ঢাকায় ফিরে কাল অফিস করবো। তখন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে।

আজই তো সময় শেষ হচ্ছে। সময় কি আরও বাড়বে?- এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ (সময়) শেষ হচ্ছে। সময় আরও বাড়তে পারে। তবে বাড়লেও কতদিন বাড়ছে, সেটা আমি এখন বলতে পারবো না। কাল অফিসে গেলে বলা যাবে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৮টায় হজ পোর্টালে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মোট এক লাখ ১৫ হাজার ৬৩৪ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৮২৯ জন এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ ৫ হাজার ৮০৫ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। এখনও কোটা পূরণে বাকি আছে ১১ হাজার ৫৬৪ জন।

এবার হজের খরচ অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় হজের নিবন্ধনে ভাটা পড়েছে। চার দফা সময় বাড়িয়েও কোটা পূরণ করা যায়নি।

চলতি বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। তখন বলা হয়েছিল সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক ৪২ হাজার ২৯৩ পর্যন্ত এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক নিবন্ধনের সর্বশেষ ক্রমিক ৭ লাখ ৮ হাজার ৩৬৪ পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। তবে কোটার বিপরীতে খুবই কম সংখ্যক হজযাত্রী নিবন্ধিত হন। পরে নিবন্ধনের সময় ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সময়েও কোটার অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়। সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময়ের মধ্যেও সাড়া পাওয়া যায়নি। শেষে নিবন্ধনের সময় ২১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এর আগে বলা হয়েছিল, নিবন্ধনের সময়সীমা ১৬ মার্চ পর্যন্ত চূড়ান্ত ও শেষবারের মতো বর্ধিত করা হলো। ২১ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানোর সময়ও বলা হয়, হজযাত্রীদের বিশেষ অনুরোধে শেষবারের মতো সময় বর্ধিত করা হলো।

সর্বশেষ সময় বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নিবন্ধনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক উন্মুক্ত রয়েছে। যারা এখনো পাসপোর্ট পাননি তাদের জন্য এটি একটি অনন্য সুযোগ।

কোটা পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিবন্ধন সার্ভার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২১ মার্চ হজ কার্যক্রম পরিচালনাকারী সব ব্যাংককে অফিস সময়ের পরেও প্রস্তুত করা ভাউচারের অর্থ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকের শাখা খোলা রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনের নিয়ম রাখা হয়েছে। এবার সরকারিভাবে হজ পালনে খরচ হবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এরসঙ্গে যুক্ত হবে কোরবানির খরচ।

গত বছর সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ হয়। প্যাকেজ-১ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে ৯৬ হাজার ৬৭৮ টাকা। প্যাকেজ-২ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকা। বেসরকারিভাবে হজ পালনে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৪ টাকা। এবারের হজে যাওয়ার খরচ অনেকেরই সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।

শেয়ার করুন