গত জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকারের দেওয়া প্রতিবেদনের বিষয়ে কথা বলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমাদের দেশে গণতন্ত্র সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত নয়। যারা অভিযোগ তুলেছে, সেই যুক্তরাষ্ট্রেও গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। সমালোচনা করার আগে নিজেদের ভেতরের চিত্রটাও দেখুন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বংশালে এক সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বংশালের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্কুলের মাঠে আওয়ামী যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫ ও ৩৬ নং ওয়ার্ড ইউনিটের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাছে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে বিবেচিত হয়নি। ওই নির্বাচনে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরানো, বিরোধী দলের প্রার্থীদের এজেন্ট ও ভোটারদের ভয় দেখানোসহ নানা অনিয়মের খবরে পর্যবেক্ষকেরা এ ধারণা পোষণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ‘২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে গতকাল সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে হঠাৎ করে একটা প্রতিবেদন বের হয়েছে। গত নির্বাচন নাকি অবাধ হয়নি, সুষ্ঠুও হয়নি। বিরোধী দলের কর্মসূচিতে নাকি আমরা বাধা দিই। নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদেরের প্রশ্ন, পৃথিবীর কোন দেশে গণতন্ত্র সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত? আমরাও পারফেক্ট নই। আমরা সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত নই। কিন্তু যেটাকে আপনারা ত্রুটিমুক্ত বলেন, সেটা যদি হতো, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ কি জিতত? এ সত্যটা স্বীকার করুন।
গণতন্ত্রের ত্রুটি দেশে দেশে আছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা অভিযোগ করেছে, তাদের দেশেও আছে। তাদের দেশেও গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ পর্যন্ত পরাজয় স্বীকার করেননি। এ কথা কি ভুলে যান? অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার আগে নিজের ঘরের চিত্রটা বলুন। কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনের বিরুদ্ধে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা বাধিয়ে পাঁচটি প্রাণ রক্তাক্ত হয়ে ঝরিয়েছেন। সেই ইতিহাস আমরা কিন্তু ভুলিনি।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে স্পিকার নির্বাচন করতেও ১৫ বার ভোট করতে হয়েছে। গণতন্ত্র কোথাও ত্রুটিমুক্ত নয়।