‘আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। সেখান থেকে হিরো আলমের মতো একটা লোকের উত্থান হয়েছে। যে উত্থান কুরুচি, কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির উত্থান। এই উত্থান কীভাবে রোধ করা যাবে, এটা যেমন রাজনৈতিক সমস্যা, তেমনি আমাদের সাংস্কৃতিক সমস্যাও।’ কথাগুলো নাট্যজন মামুনুর রশীদের। সম্প্রতি অভিনয় শিল্পী সংঘের একটি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি জানালেন, হিরো আলম সম্পর্কে আগে তিনি খুব একটা জানতেন না। তবে নাট্যাঙ্গনের কয়েকজন তাঁকে হিরো আলমের কর্মকাণ্ড সম্পর্ক অবহিত করেছিলেন। এরপর থেকেই হিরো আলমকে নিয়ে বিরক্ত ছিলেন তিনি।
মামুনুর রশীদ বললেন, কয়েকজন বলার পর খোঁজ নিয়ে দেখলাম, হিরো আলম যখন সংসদ নির্বাচন করছে, তাকে কেউ একজন একটা গাড়ি দিচ্ছে। সেই গাড়ির আবার নয়-দশ বছরের ফিটনেস নেই। এই হিরো আলম নিয়ে আমি অনেক দিনই বিরক্ত ছিলাম। বিরক্ত ছিলাম এই কারণেও, আমাদের দেশের মানুষের তো রুচির দুর্ভিক্ষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমাদের রাষ্ট্র তো কোনোভাবে রুচির উন্নয়নে কাজ করছে না। তাই এখন আমার আর রাজনীতির কাছে, রাষ্ট্রের কাছে, সংস্কৃতির কাছে, কোথাও আবেদন-নিবেদন নেই। আমার আবেদন, যে মানুষগুলো সামাজিক কাজের প্রতি দায়বদ্ধ, তাদের প্রতি।
দেশের বাইরের উদাহরণ টেনে এনে মামুনুর রশীদ বললেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে তো সাধারণ মানুষ বাধা দেয়। অস্ট্রেলিয়াতে একবার দেখেছি, একদিন সকালে হঠাৎ কলার দাম বেড়ে গেল। ওদের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব রাষ্ট্রব্যবস্থা এ নিয়ে তোলপাড়। শেষমেশ দাম কমাতে বাধ্য হলো। বাইরে থেকে আমদানি করা শুরু করল, তখন ব্যবসায়ীরাও বিপদে পড়ে গেলেন। আর আমাদের এখানে রাষ্ট্র কোনো ধরণের ব্যবস্থা নেয় না, আর মানুষও এত বেশি দাম সত্ত্বেও সবকিছু মনে নিচ্ছে! মেনে নিচ্ছে বলেই ব্যবসায়ীরা যা খুশি করছেন। বাংলাদেশ একটা ব্যবসায়ীদের রাষ্ট্র হয়ে গেছে, আ স্টেট অব বিজনেসম্যান।