পর্যটন শিল্পে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন আর সমুদ্রবন্দর মোংলা ‘সুবর্ণভূমি’ হয়ে ওঠার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করতে যাচ্ছে ‘খুলনা-মোংলা রেলপথ’। পদ্মা সেতুর পর এ রেললাইন চালু হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। অর্থনীতির চাকা আরও সচল হবে। যা জিডিপিতে বড় অবদান রাখবে। একদা মৃতপ্রায় মোংলাবন্দর হয়ে উঠবে বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম ব্যস্ত বন্দর।
সঙ্গে জীববৈচিত্র্যের আধার বিশ্বের বৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আট প্রহরে ছয় রূপ ধারণ করা সুন্দরবন হয়ে উঠবে পর্যটকে মুখরিত। পর্যটন খাতে রাজস্ব বাড়বে। সর্বোপরি এ রেল পথ ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বে আর একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। পূরণ হবে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সরকারের আরও একটি প্রতিশ্রুতি।
চার হাজার ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে’র কাজ ৯৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পের গত এক যুগে প্রথম ইঞ্জিন চলেছে। খুলনা-মোংলা লাইনের ফুলতলা অংশের ডাইভার্সন লাইন ও লুক লাইনের সঙ্গে প্রধান লাইনের সমন্বয় করতে পরীক্ষামূলকভাবে ৫ কিমি পথে রেল ইঞ্জিন চালানো হয়। বাকি কাজ আসছে জুন মাসের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান জানান।
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের প্রত্যাশিত ছিল খুলনা-মোংলা রেলপথ। যা মোংলাবন্দর প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পর পূরণ হতে যাচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায়। এ রেললাইন চালু হলে মোংলাবন্দর ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সরাসরি আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের দ্বার উন্মুক্ত হবে। একইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে অনেক গতি আসবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনাও তৈরি হবে। সামগ্রিকভাবে শক্তিশালী হবে দেশের অর্থনীতি।
খুলনা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ট্রেজারার লেখক অমিত রায় চৌধুরী বলেন, এ রেল পথ চালু হলে চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন যাতায়াতকারী মানুষের ভোগান্তি অনেকাংশে হ্রাস পাবে। স্বস্তিতে মানুষ যাতায়াত করতে পারবেন। গ্রামীণপণ্য পরিবহন সহজ হবে। তাছাড়া মোংলাবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। একইসঙ্গে সুন্দরবনে পর্যটদের আগমন বাড়বে।