নওগাঁয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হাতে আটকের পর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুলতানা জেসমিন (৪৫) নামের এক নারী মৃত্যুবরণ কেরন। বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় সেদিন অভিযানে অংশ নেওয়া র্যাবের ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র্যাব সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটি।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাতে জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, নওগাঁয় র্যাবের হাতে আটক নারী অসুস্থ হওয়া ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। র্যাব সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঢাকা থেকে রাজশাহী র্যাব ক্যাম্পে গিয়েছেন। ওইদিনে অভিযানে অংশ নেওয়া জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পের ১১ সদস্যকে রাজশাহী র্যাব ক্যাম্পে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তারা।
তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র্যাবের এই ১১ সদস্য আবার জয়পুরহাটে ফিরে যাবেন বলেও জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
১১ র্যাব সদস্যকে ক্লোজড কিংবা কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। ক্লোজড কিংবা ব্যবস্থা নেওয়ার খবর গুজব।
এদিকে গতকাল বুধবার জেসমিন প্রতারক চক্রের প্রধান মো. আল-আমিনকে (৩২) রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। আল-আমিন রাজশাহীতে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের প্রধান বলে জানিয়েছে র্যাব।
আল-আমিন রাজশাহীতে কর্মরত একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি প্রতারক চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, চক্রটি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্মসচিব মো. এনামুল হকের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আইডি খোলে। এরপর সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে চক্রটি।
পরবর্তীতে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি জানতে পারলে গত ২৩ মার্চ রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় আল-আমিন ও তার সহযোগী সুলতানা জেসমিনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে।
আল-আমিনকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, আল-আমিন একজন মোবাইল ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসার সুযোগ নিয়ে প্রতারণামূলকভাবে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম-পদবি ব্যবহার করে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে অর্থআত্মসাৎ সিন্ডিকেটের সঙ্গে কাজ করে আসছিলেন।
এর আগে গত ২২ মার্চ আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র্যাব। ২৪ মার্চ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।