সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের আদালতে পৌঁছার পর তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। খবর বিবিসির।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ট্রাম্পই প্রথম সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হলেন। আদালতে হাজির হওয়ার পর ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর আদালতের অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু হয়।
আদালতে ঢোকার আগে ট্রাম্প সেখানে সমবেত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। এর আগে ট্রাম্প টাওয়ার থেকে তিনি গাড়িবহর নিয়ে ম্যানহাটান ক্রিমিনাল কোর্ট ভবন এলাকায় যান। ওই এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেখানে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।
আদালত ভবনে ঢোকার সময় সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন ট্রাম্প। তাঁর সমর্থনে ওই এলাকায় বিক্ষোভকারী ও তাঁর সমর্থকেরা জড়ো হয়েছেন। তাদের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখে পুলিশ। আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দেয়।
আদালতে বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য ট্রাম্পের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হবে। এরপর আদালতে তাঁকে অভিযোগের বিষয়ে জানানো হবে। শুনানি শেষে তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করার কথা রয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দুঃখজনক একদিন (আজ)।’ তাঁর এক ই–মেইল বার্তার বিষয় ছিল, ‘গ্রেপ্তার হওয়ার আগে আমার শেষ ই-মেইল।’ এতে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষায় জনগণকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করার জন্য ফ্লোরিডা থেকে নিউইয়র্কে পৌঁছান ট্রাম্প। ট্রাম্পের উপস্থিতি ঘিরে শুধু ম্যানহাটান নয়, পুরো নিউইয়র্কের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ট্রাম্প টাওয়ারসহ ম্যানহাটানের ফিফথ অ্যাভিনিউজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ।
যে বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করবেন, তাঁকে ‘একবারেই দলবাজ’ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, ওই বিচারকের পরিবার ‘ট্রাম্পবিদ্বেষী হিসেবে সুপরিচিত’।
ট্রাম্পকে নিয়ে গণমাধ্যমে আগ্রহ বরাবরই ছিল। তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় বিশ্বের তাবৎ সংবাদমাধ্যম ফলাও করে এ-সংক্রান্ত খবর প্রচার-প্রকাশ করছে। ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে ভিড় করেছেন অসংখ্য সাংবাদিক।
সম্পর্ক নিয়ে মুখ না খুলতে পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় বিচারের মুখোমুখি হলেন ট্রাম্প। স্টরমির দাবি, ২০০৬ সালে দুজন শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। পরে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে তাঁকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প।