রাজধানীর গুলিস্তানের বঙ্গবাজারে এখন নতুন পোশাকের মৌতাতের বদলে বাতাসে ভাসছে পোড়া গন্ধ। থেমে গেছে ব্যবসায়ীদের চাঞ্চল্য, নেই বিকিকিনির ব্যস্ততা আর হাঁকডাক। মঙ্গলবারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর বঙ্গবাজার এখন ধ্বংসস্তূপ, নিঃস্ব ব্যবসায়ীদের চোখের নোনাজল মেশানো একখণ্ড পোড়া জমি। সেখানে এখন আর ক্রেতা নেই, পড়ছে কেবল সর্বস্বান্ত ব্যবসায়ীদের পা।
কেউ চাপড়াচ্ছেন বুক, কারও চোখে নীরবে বইছে জল। দুঃসময়ে ধ্বংসস্তূপের ছাই উড়িয়ে নিজের স্বপ্নের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পোড়া ভিটায় অনেকে হাতড়াচ্ছেন সুসময়ের স্মৃতি।
সর্বগ্রাসী অনল বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের চোখে-মুখে এঁকে দিয়ে গেছে ঘুরে দাঁড়ানো আর দেনা শোধের চিন্তারেখা। অনেকেই ব্যাংক, এনজিও থেকে ঋণ এবং আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে দোকানে নতুন মালপত্র তুলেছিলেন। এখন সব হারিয়ে সরকারের সহযোগিতা নিয়ে বঙ্গবাজারেই পুনর্বাসন চান ব্যবসায়ীরা।
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আশপাশের আট মার্কেটের অন্তত পাঁচ হাজার দোকান ছাই হয়। বুধবার সকাল থেকে বঙ্গবাজার লাগোয়া ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের সামনের সড়কে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়। ওই তালিকায় নাম তুলতেও ছিল লম্বা সারি।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দ্রুত সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেট সংস্কার করে পুনরায় ব্যবসা শুরু করতে প্রয়োজনীয় সহায়তা চান। পুড়ে যাওয়া মার্কেটের সামনে বুধবার বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স ব্যবসায়ী সমিতির ব্যানারে এ আহ্বান জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বুধবার দিয়েছেন। তিনি বলেন, রমজানে ব্যবসায়ীদের কষ্ট ও কান্না সহ্য করা যায় না। আমি আগেই বলেছি, আমরা সাধ্যমতো সাহায্য করব। ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মূল্যায়ন করব।