গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখছে জাতীয় সংসদ: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ অনেক চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখে চলেছে।

জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আজ শুক্রবার আয়োজিত সংসদের বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনার জন্য জাতীয় সংসদে একটি সাধারণ প্রস্তাব তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই প্রস্তাবের ওপর সংসদে আলোচনা শুরু হয়েছে। আগামীকাল শনিবার ও রোববার এই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেবেন সংসদ সদস্যরা। পরে প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হবে।

সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উত্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়, জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে সংসদের অভিমত এই যে, সংসদ সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুরূপে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন এবং আশা–আকাঙ্ক্ষার সফল বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র হবে সুসংহত, শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, সকলের জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে, সংবিধানের এ অঙ্গীকারসমূহ পূরণে আমরা সকলে একযোগে কাজ করব, গড়ে তুলব আগামীর সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা—এই হোক আমাদের প্রত্যয়।

সংসদে প্রস্তাব উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৫০ বছরের পথচলায় জাতীয় সংসদ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে। ৫০ বছরের পথপরিক্রমা অনেক ক্ষেত্রেই মসৃণ ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার পর বারবার সামরিক ফরমান জারি করে সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। গণতন্ত্র ও জাতীয় সংসদের ওপর আঘাত এসেছে। অবৈধ ক্ষমতা দখল, সামরিক ও স্বৈরশাসনের পালাবদলের মধ্য দিয়ে সংবিধানের চার মূলনীতিতে আঘাত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে কালো আইনে পরিণত করা ছিল সংসদীয় ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। পরে সপ্তম সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ সুগম করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আশা করি, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।

সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সংসদ ও সংসদীয় কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রণালয়ের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে মন্ত্রীর পরিবর্তে সদস্যদের নির্বাচিত করা হচ্ছে। বিরোধী দলের সদস্যদের থেকে স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হচ্ছে। কমনওয়েলথ পার্লামেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নে (আইপিউ) সভাপতিত্ব ছিল বাংলাদেশের সংসদের প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের আস্থার প্রতীক। নারীর ক্ষমতায় বাংলাদেশের সংসদ একটি অনন্য দৃষ্টান্ত।

সংসদ নেতা বলেন, বর্তমান সংসদের স্পিকার, সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলের নেতা, একজন হুইপ, চারজন নারী স্থায়ী কমিটির সভাপতির ভূমিকা পালন করছেন। জাতীয় রাজনীতিকে নারীদের উৎসাহিত করতে সংসদে নারী আসন ৫০–এ উন্নীত করা হয়েছে।

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের মঞ্চ জাতীয় সংসদ সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নে অংশীদার এবং সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অর্জনগুলো সংসদে আলোচনার মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপিত হয়।

শেয়ার করুন