তাইওয়ান প্রণালীতে ৩ দিনের যুদ্ধমহড়া শুরু করেছে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইন-ওয়েনের বেইজিংয়ের কড়া হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে সম্প্রতি আমেরিকা সফর করে দেশটির প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এর বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দিতেই এই মহড়া পরিচালনা করা হচ্ছে বলে চীন জানিয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ৭১টি চীনা সামরিক বিমান শনিবার তাইওয়ান প্রণালীর সংবেদনশীল মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে। লস অ্যাঞ্জেলেসে স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে বুধবারের বৈঠকের পর সাই দেশে ফিরলে পরদিনই সফরের নিন্দা জানিয়ে তিন দিনের মহড়া শুরু করেছে চীন।
চীন গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে তার নিজস্ব এলাকা হিসেবে দেখে এবং দ্বীপটিকে তার নিয়ন্ত্রণে আনতে শক্তি প্রয়োগকে কখনোই ত্যাগ করেনি। তাইওয়ানের সরকার চীনের দাবির তীব্র আপত্তি জানিয়েছে।
চলমান মহড়ার নাম দেয়া হয়েছে ‘ঐক্যবদ্ধ ধারালো তলোয়ার।’ মহড়াটি শনিবার শুরু হয়েছে এবং আগামী সোমবার পর্যন্ত চলবে। চীনা পিপলস লিবারশেন আর্মি বা পিএলএ’র পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
পিএলএর’ মুখপাত্র শি ইন জানান, তাইওয়ান প্রণালীর উত্তর ও দক্ষিণ উপকূলের সমুদ্রসীমা এবং আকাশসীমায় এই যুদ্ধ মহড়া চলবে। এছাড়া, তাইওয়ান দ্বীপের পূর্বপ্রান্তেও মহড়া পরিচালনা করা হবে।
এই মুখপাত্রের বরাত দিয়ে চীনা রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলছে, এবারের যুদ্ধ মহড়া তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং বাইরের শক্তির উসকানিমূলক তৎপরতার বিরুদ্ধে চরম সতর্কবার্তা। চীনের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডত্ব রক্ষার জন্য এই মহড়া খুবই জরুরি ছিল।
চীন ইউরোপের সিনিয়র নেতাদের একটি সফরের আয়োজন করার কয়েক ঘণ্টা পর বেইজিংয়ের ঘোষণাও এসেছে। চীনা সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এটি তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি এবং বহিরাগত শক্তির যোগসাজশ ও উস্কানির জন্য একটি গুরুতর সতর্কতা এবং এটি জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।’
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার বিকেল ৪টায় বলেছে তারা ৭১টি চীনা বিমান দেখেছে, যার মধ্যে ফাইটার জেট এবং বোমারু বিমান রয়েছে। সবগুলোই মধ্যরেখা অতিক্রম করছে যা সাধারণত দুই পক্ষের মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক বাধা হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি নয়টি চীনা জাহাজও রয়েছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, চীন সাই-এর মার্কিন সফরকে ‘সামরিক মহড়া চালানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে, যা আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সামরিক বাহিনী শান্ত, যৌক্তিক এবং গুরুতর মনোভাবের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাবে এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ‘বাড়বে না বা বিরোধ নয়’ নীতি অনুসারে পাহারা দেবে এবং পর্যবেক্ষণ করবে।’