দেশকে ঝুকিপূর্ণ ও সংকটময় দেখাতে একটা গোষ্ঠী মরিয়া: যুবলীগ চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশকে ঝুকিপূর্ণ ও সংকটময় দেখাতে একটা গোষ্ঠী মরিয়া বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। শনিবার (৮ এপ্রিল) তুরাগের কামারপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, আর ৯ মাস পরে আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে আমার বিশ্বাস আপনারা নিশ্চয় তাদেরকেই ভোট দিবেন, যারা আপনাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। আপনারা নিশ্চয় তাদেরকেই ভোট দিবেন, যাদের দ্বারা গণতন্ত্র সুসংহত হবে, শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সকলের জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। এই অঙ্গীকারসমূহ পূরণে আমাদের সবারই একযোগে কাজ করা উচিত, যাতে করে আমরা গড়ে তুলতে পারি আগামীর সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ।

পরশ বলেন, ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সালের পর থেকে দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রয়েছে বলেই একটা স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে। কিছু প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ সৃষ্টি হবে ইনশাআল্লাহ।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, গত পরশু পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও একটি বড় মাইলফলক সাফল্য অর্জন হলো। এত অর্জন সত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজকে যে ষড়যন্ত্র চলছে সেটা এ দেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, এ দেশের মেহনতি কর্মজীবী মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আপনাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবিলায় আমাদের বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তাই গ্রুপিং, বিভক্তি এবং ভেদাভেদের কোনভাবেই এখন কাম্য না।

যুবলীগের এই শীর্ষনেতা বলেন, একটা ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের এক পরিকল্পিত নীলনকশার বাস্তবায়ন চলছে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা চলছে যে, সাধারণ মানুষ যেন সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। দেশের সুশীলসমাজের একটি অংশ এখন জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তৎপর হয়েছেন। আর এ নীলনকশার বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছেন এক-এগারোর কুশীলবরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত এখন বেশ জোরেশোরে চলছে।

তিনি বলেন, কিছু গণমাধ্যম এখন খুবই নগ্নভাবে বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ, যার ন্যাক্কারজনক বহিঃপ্রকাশ সম্প্রতি জনগণের সম্মুখে এসেছে প্রথম আলোর হলুদ সাংবাদিকতার মাধ্যমে। এটাকে শুধু হলুদ সাংবাদিকতা বলা যায় না। এই ধরণের সাংবাদিকতা সমগ্র সাংবাদিক পেশাজীবীদের কলঙ্কিত করেছে। এর মাধ্যমে শিশুর সরলতাকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রদ্রোহিতা করা হয়েছে। একজন সাংবাদিকের সন্তান হিসেবে ভিষণভাবে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। আমি প্রথম আলোকে প্রত্যাখ্যান করে এদেরে বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেবার জন্য সরকারের কাছে দাবি করছি। চক্রান্তকারীরা দেশটাকে ঝুকিপূর্ণ, সংকটময় ও রাষ্ট্রকে ব্যর্থ দেখানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা, ইফতারের নামে প্রহসন না করা, ইফতারের নামে অর্থ ব্যয় না করে সেই অর্থ অসহায় মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার যে নির্দেশনা, সেই নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাচ্ছে আওয়ামী পরিবারের নেতাকর্মীরা। বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা একটাই মানুষের পাশে দাঁড়াও। আমরা সেই নির্দেশনাই পালন করছি। আমরা যখন বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশে মানুষের কল্যাণে কাজ করছি, মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছি সেই সময় এই বিএনপি-জামাত নামি-দামি হোটেলে, নামি-দামি খাবার খেয়ে ইফতার পার্টি করছে। অথচ আমার মা-বোনেরা, আমার বাবারা রোজা রেখে একটু চা-মুড়ি দিয়ে ইফতার করবে সে সাধ্য তাদের নেই।

নিখিল বলেন, করোনার মহামারির সময় সারা পৃথিবী বিধ্বস্ত, অর্থনীতির চাকা থেমে গিয়েছিল। ঠিক তারপরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর সবদেশ আজকে অর্থনৈতিকভাবে বিধ্বস্ত। বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকা থমকে গিয়েছে। সেখানে নিত্যপণ্য সামগ্রী কিনতে মানুষের নাভিশ্বাস ওঠছে। অথচ বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের ধারাবাকিতা রক্ষা করে। তাই আমি বলতে চাই-আগামী নির্বাচনে আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে আবারও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন এই প্রত্যাশা করি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হাবিব হাসান বলেন, আপনাদের যেকোন দুর্যোগ-দুর্বিপাকে আমরা আপনাদের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এদেশ থেকে দারিদ্রতা দুর করবেন। তাই আগামী দিনেও নৌকায় ভোট দিবেন এবং বঙ্গবন্ধুকন্যাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন।

শেয়ার করুন