রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে ঈদ সামনে রেখে জুতা, শাড়ি, প্যান্ট, শার্টসহ নানা ধরনের পোশাকসামগ্রী দোকানে তুলেছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কিন্তু আজ শনিবার দুপুরে মার্কেটের সামনের ফুটপাতে গিয়ে দেখা গেল হাঁটুসমান পানি। সেখানে ভাসছিল নানা রঙের জুতা। কয়েকজন ব্যবসায়ী পানিতে নেমে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা সেসব তুলে গুছিয়ে রাখছিলেন।
অথচ শুক্রবার রাতেও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল এসব দোকানে। ভোরে এ মার্কেটের তৃতীয় তলায় আগুন লাগার পর সামনের ফুটপাতের দোকানগুলো পোড়েনি। কিন্তু লুট হয়ে গেছে দোকানের অধিকাংশ মালামাল।
এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের একজন মো. হাবীব। প্রায় ১৫ বছর ধরে নিউ সুপার মার্কেটের সামনের ফুটপাতে জুতার ব্যবসা করছেন তিনি। ঈদের আগে দোকানে অন্তত তিন লাখ টাকার নতুন জুতা তুলেছিলেন তিনি। বেচাকেনাও জমে উঠেছিল ভালোই। গতকাল শুক্রবার রাত তিনটার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় যান।
সাহ্রি খাওয়ার পর খবর পান, মার্কেটে আগুন লেগেছে। সঙ্গে সঙ্গে চলে আসেন ঘটনাস্থলে। দেখেন নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় আগুন জ্বলছে। নিচেই নিজের দোকানের দিকে তাকাতে চোখ আটকে যায় তার। পলিথিন দিয়ে ঢেকে যাওয়া তার জুতার দোকানের অস্তিত্ব নেই। সেখানে জমেছে হাঁটুপানি।
হাবীব বলেন, সাহ্রি খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। খবর পেয়ে এসে দেখি, আমাদের প্রায় সব মালামাল লুটপাট হয়ে গেছে। ঈদের সময় আমাদের ভালো ব্যবসা হয়। এ জন্য মানুষের কাছ থেকে টাকা হাওলাত করে মালামাল তুলি। এখন আমরা ক্যামনে কি করমু?
শুধু হাবীবের দোকান নয়, ঢাকার নিউ সুপার মার্কেটের সামনে অন্তত ৩০টি দোকানের মালামাল খোয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। শনিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সেখানে দেখা যায়, ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা হাঁটুপানিতে নেমে জুতাসহ অন্যান্য জিনিসপত্র খুঁজছিলেন।
৪ এপ্রিল ভোরে রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটে। সেই আগুনে সর্বস্বান্ত বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা এখন চৌকি পেতে পণ্য বিক্রি করছেন। চেষ্টা করছেন ঘুরে দাঁড়ানোর। এর ১১ দিন পর আবার নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।
বঙ্গবাজারের পর নিউ সুপার মার্কেটের ভয়াবহ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে এই আগুন তাদের সর্বস্বান্ত করে ফেলেছে। ধারদেনা করে যে মালামাল তুলেছিলেন, তা–ও পুড়ে গেল।