ব্যয় অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় দফায় দফায় হজের নিবন্ধনের সময়ে বাড়িয়েও এবার কোটা পূরণ করতে পারেনি সরকার। একই সঙ্গে ৫৬১ জন হজযাত্রী নিবন্ধন বাতিলও করেছেন।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে হজ পরিচালকের কাছে পাঠানো এক চিঠি থেকে নিবন্ধন বাতিলের এ তথ্য জানা গেছে।
আট দফা সময় বাড়ানোর পর সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল হজের নিবন্ধনের সময় শেষ হয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।
হজ পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী মোট এক লাখ ১৯ হাজার ৬৯৫ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ১০ হাজার ৩৫ জন এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ ৯ হাজার ৬৬০ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। এখনও কোটা পূরণে ৭ হাজার ৫০৩ জন হজযাত্রীর নিবন্ধন বাকি আছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে হজ পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের হজে গমনেচ্ছু নিবন্ধিত সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনার পাঁচশতাধিক হজযাত্রী নানাবিধ সমস্যার কারণে হজে গমনে অপারগতা প্রকাশ করে নিবন্ধন বাতিল করে জমা করা অর্থ রিফান্ড করার জন্য আবেদন করেছেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে তাদের নিবন্ধন বাতিলের আদেশ এরই মধ্যে জারি করা হয়েছে। কিন্তু নিবন্ধিত হজযাত্রীদের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হলেও বর্ণিত নিবন্ধন বাতিলকারী হজযাত্রীদের তথ্য নিবন্ধন সার্ভারে এখনো সক্রিয় রয়েছে।
সেই কারণে নিবন্ধন বাতিলকারী এজেন্সির হজযাত্রীদের সংখ্যা নিবন্ধন সিস্টেমে পূর্বের সংখ্যাই প্রদর্শিত হচ্ছে; যা সৌদি আরবে এজেন্সিভিত্তিক হজযাত্রীর সংখ্যা প্রেরণের পূর্বেই সঠিক করা একান্ত প্রয়োজন।
তাই নিবন্ধন বাতিল করা হজযাত্রীদের অনুমোদিত তালিকানুযায়ী ওই ব্যক্তিদের নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য আইটি প্রতিষ্ঠান বিজনেস অটোমেশনের মাধ্যমে পিআরপি সিস্টেম থেকে বাতিল করে সিস্টেমে সর্বশেষ বিদ্যমান হালনাগাদ হজযাত্রীর সংখ্যাভিত্তিক এজেন্সির তালিকা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।
চিঠির সঙ্গে ৫৬১ জনের হজের নিবন্ধন বাতিল করা আদেশের কপিও যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনের নিয়ম রাখা হয়েছে। এবার সরকারিভাবে হজ পালনে খরচ নির্ধারণ করা হয় ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয় ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এরসঙ্গে যুক্ত হবে কোরবানির খরচ।
গত বছর সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ হয়। সেই অনুযায়ী প্যাকেজ-১ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বাড়ে ৯৬ হাজার ৬৭৮ টাকা, প্যাকেজ-২ এর ক্ষেত্রে খরচ বাড়ে এক লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকা। বেসরকারিভাবে হজ পালনে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বাড়ে এক লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৪ টাকা। এবারের হজে যাওয়ার খরচ অনেকেরই সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।
পরে সৌদি প্রান্তের খরচ কমায় গত ২২ মার্চ সরকারি ও বেসরকারি হজের প্যাকেজ মূল্য ১১ হাজার ৭২৫ টাকি কমানো হয়।
নানা কারণে হজের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে বলে বাতিলের আদেশে জানানো হয়েছে। যারা নিবন্ধন বাতিল করেছেন তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।